
শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ছিল দেশকে মেধাশূন্য করার গভীর চক্রান্ত—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত শিক্ষক, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দেওয়া বাণীতে তারেক রহমান বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন এবং স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরেছিলেন। তাদের জীবন ও কর্ম আজও জাতিকে অনুপ্রাণিত করে। স্বাধীনতার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল, যা আজও পুরো জাতিকে বেদনাবিধুর করে রাখে।
তারেক রহমান বলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ছিল একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য ছিল দেশকে মেধাশূন্য করে দেওয়া এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে দুর্বল করে ফেলা। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে স্বাধীনতার পক্ষে থাকা বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে তারা যে আদর্শ রেখে গেছেন—জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চা, মুক্ত চিন্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির চেতনা—তা আজও একটি উন্নত, প্রগতিশীল ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের প্রত্যয় জাগিয়ে তোলে।
তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অভিষ্ট লক্ষ্য ছিল একটি আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পার হলেও তাদের সেই স্বপ্ন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। গণতন্ত্র বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় একদলীয় দুঃশাসনের বাতাবরণ তৈরি করে গণতান্ত্রিক বিকাশ প্রতিহত করা হয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, অনেক রক্ত ঝরলেও আজও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, লেখা ও বলার স্বাধীনতা সংকটের মধ্যেই রয়েছে। গণতন্ত্রকে বারবার মৃত্যুকূপে নিক্ষেপ করা হয়েছে, যা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শের পরিপন্থী। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে মত ও পথের বৈচিত্র্য থাকা অপরিহার্য হলেও তা দীর্ঘদিন ধরে বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়েই তাদের আত্মত্যাগের প্রকৃত মর্যাদা নিশ্চিত করা সম্ভব।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আসুন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।







