
দুই সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ৪০০ টাকা—এখন কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট ও পলাশী কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে বর্তমানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানে এ দাম আরও কিছুটা বেশি।
কিন্তু মরিচের দামে স্বস্তি এলেও অন্য পণ্যগুলো যেন আগুন জ্বেলে রেখেছে বাজারে। বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম এখনও আকাশছোঁয়া—বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, আর কিছু সবজি ১০০ টাকাও ছাড়িয়েছে।
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ও টমেটো এখন সবচেয়ে দামি সবজি। আকারভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৮০ টাকায়। ভারত থেকে আমদানি করা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স ও লতির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। আর পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, লাউয়ের কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা।
তবে কিছু পণ্যে এখনো খানিকটা স্বস্তি রয়েছে—মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দামও স্থিতিশীল, কেজিপ্রতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইলিশ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে রাজধানীর বাজারে দেখা দিয়েছে মাছের সংকট। এতে রুই, কাতলা, চিংড়ি, ট্যাংরা থেকে শুরু করে ছোট মাছ—সব কিছুর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
এদিন বাজারে ইলিশ বিক্রেতাদের দেখা যায়নি। কাচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, ট্যাংরা, চিংড়ি ও বাতাসি ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকায়। চাষের রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। পাঙাশ মাছ ২২০ থেকে ২৫০, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, “ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় সরবরাহ কমে গেছে, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্য মাছের দামও বাড়ছে।”
মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় অনেকেই এখন বিকল্প হিসেবে ডিমের ওপর নির্ভর করছেন। কিন্তু ‘সহজ প্রোটিন’-এর এই উৎসও এখন ব্যয়বহুল। লাল ডিম ডজনপ্রতি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, সাদা ডিম ১৩৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, “সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন ডিম কিনছে বেশি। তাই দামও বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত।”
এদিকে মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। ব্রয়লার ১৮০, সোনালি ২৯০ থেকে ৩০০ এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, খাসির ১,১০০ থেকে ১,২০০ টাকায় এবং বকরির মাংস ৯০০ থেকে ১,০০০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, “এখন গরুর মাংস বা মাছ খাওয়া বিলাসিতা হয়ে গেছে। বাজারে গেলে মনে হয়—সবকিছু হাতের নাগালের বাইরে।”