
সূত্রটি জানায়, নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্তে মঙ্গলবার দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশন। সেখানে সংলাপ থেকে প্রাপ্ত দলগুলোর মতামত ও ভোটের প্রস্তুতি তুলে ধরার কথা রয়েছে।
ওই সাক্ষাতেই মূলত চূড়ান্ত হতে পারে নির্বাচনের তারিখ। এ ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণার রীতি অনুযায়ী আগামী ৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন প্রধান নির্বাচন কমিশন।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি ছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু রমজানের আগেই নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পরিকল্পনায় আরও এক সপ্তাহ এগিয়ে আনা হচ্ছে নির্বাচন। জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সময়ের আলোকে বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল। তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগে ৩ তারিখ ঘোষণার বিষয়ে একটা আলোচনা হয়েছিল। তবে ইসি তার সুবিধামতো সময়ের জন্য দুয়েক দিন এদিক-সেদিক করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রেও মিলেছে একই ধরনের আভাস। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কমিশনার সময়ের আলোকে বলেন, সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো তফসিলের তারিখ ঘোষণার জন্য চাপ দিচ্ছে। তারা তফসিলের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চায়। তাই আমরা রোববার কমিশন বসে তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এরপর দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে গণমাধ্যমকে তফসিলের বিষয় ইঙ্গিত দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। কবে তফসিল হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পষ্টভাবে কিছু না বললেও তিনি জানান, আগামী ৫ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
এদিকে সূত্র বলছে, ৫ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ ঠিক রাখতে হলে সাধারণত ৬০ দিন আগে ৭ ডিসেম্বরেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই তারিখ ধরেই আলোচনা এগিয়ে আছে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সময়ের আলোকে বলেন, কমিশন এখনও তারিখ চূড়ান্ত করেনি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষেই তফসিলের সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপ। গত বৃহস্পতিবার দুই ধাপে ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। আজ আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করবে কমিশন। এরপর সোমবার আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। এ সময় ভোটের জন্য ২৪টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এসব কর্মপরিকল্পনার সবই প্রায় শেষের পথে। ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব বলেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো চিঠিতে আগামী রমজানের আগে ভোট আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ভোটগ্রহণের তারিখের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করতে চায় কমিশন। এ ছাড়া নির্বাচন আয়োজনে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কমিশন প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। তখন থেকে ভোটের তারিখ ও তফসিল নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ১১ ফেব্রুয়ারিসহ বেশ কয়েকটি তারিখ নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারির রোজার আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সামনে রেখে সব প্রস্তুতি কার্যত সম্পন্ন। মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে দেওয়া হবে না। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।







