চব্বিশের জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রায়ের কপি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
একইসঙ্গে এ কপি দেওয়া হবে সাজাপ্রাপ্ত রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও। ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এসব কপি পাঠানো হবে।
এর আগে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এ রায় ঘোষণা করে। অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলায় প্রসিকিউশন মোট পাঁচটি অভিযোগ জমা দিলেও ট্রাইব্যুনাল রায়ে দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা অন্তর্ভুক্ত করে। অভিযোগ-১ এ তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়।
প্রথমত, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া।
দ্বিতীয়ত, ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাকসুদ কামালের সঙ্গে কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে ফাঁসি দেওয়ার হুমকি ও নির্দেশনা।
তৃতীয়ত, এসব উসকানি ও নির্দেশনার পর রংপুরে আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এসব ঘটনায় হাসিনা–কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযোগ-২ এও তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়। প্রথমত, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দেওয়া। এর পরিণতিতে ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে—যা ঘটনা নম্বর দুই হিসেবে ধরা হয়। একই দিনে সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়—যা ঘটনা নম্বর তিন।
এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জুলাই মাসে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উভয় অভিযোগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বহাল থাকে।