চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৭ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুরসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের ট্রাইব্যুনাল-১ ভবনে আনা হয়। প্রিজনভ্যান থেকে একে একে নামিয়ে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেলে আজ মামলার অগ্রগতি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
হাজির ১৭ জন আসামিরা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম, সাবেক এমপি ফারুক খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক শিল্প-বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনু এবং জুনাইদ পলকের বিরুদ্ধে আলাদা ফরমাল চার্জ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। ইনুর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণও চলছে।
এ ছাড়া জুলাই আন্দোলনে ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা ঘটানোর অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয় ও পলকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে।
একই সঙ্গে কারফিউ দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন প্রক্রিয়া চলছে।
গত ১৫ অক্টোবর পৃথক মামলায় সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের তদন্ত প্রতিবেদন আজকের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ ছিল। এর আগেও তদন্তের জন্য সময় চেয়ে একাধিকবার আবেদন করে প্রসিকিউশন।
সকালে ট্রাইব্যুনালের সামনে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। আসা–যাওয়া করা ব্যক্তিদের তল্লাশি করে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়।
চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা মিলিয়ে মোট কয়েক দফায় আসামিদের হাজির করা হয়েছে। প্রসিকিউশন জানিয়েছে-সকলের বিরুদ্ধে পৃথক চার্জ দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।