
মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, হাদির সার্জারি চলছে এবং তার মাথার ভেতরে গুলি আছে। এদিকে, ওসমান হাদি ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তার বোন মাহফুজা।
শুক্রবার বিকেলে ঝালকাঠি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ আমার ভাইকে বাঁচতে দেবে না। আমার ভাইয়ের ওপরে যারা গুলি করেছে আমরা তাদের বিচার চাই।”
মাহফুজা আরও বলেন, “আমার ভাই ভারতবিরোধী লেখা লেখে, বাংলাদেশপন্থী লেখা লেখে। সে বাংলাদেশকে খুব ভালোবাসে। আমি ওকে (হাদি) আর বাংলাদেশে রাখব না, দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিব। ভারতের ‘র’ আছে, আওয়ামী লীগ আছে, তাকে বাঁচতে দেবে না।”
অন্যদিকে, ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে সড়ক অবরোধ করেছে জুলাই আন্দোলনের সমমনা দলগুলো। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ কর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
অবরোধকারীরা জানান, ওসমান হাদীর ওপর হামলাকারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে না পারলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তাদের দাবি, হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
এনসিপি’র ঝালকাঠি জেলা সমন্বয়ক মাইনুল ইসলাম মান্না বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে শনিবার বিকেল ৪টায় ঝালকাঠি শহরের কলেজ মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করা হবে। জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনা করে আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়েছে।
এর আগে, দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল দিক থেকে একটি কালো মোটরসাইকেলে করে দুজন ব্যক্তি আসে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি ক্লোজ রেঞ্জ (খুব কাছ) থেকে হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার পরপরই মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, হাদির মস্তিষ্কে গুলি লেগেছে, তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার অস্ত্রোপচার চলছে।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে দেশি-বিদেশি ৩০টি নম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন হাদি। ১৪ নভেম্বর ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, তাকে হত্যা, তার বাড়িতে আগুনসহ তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওসমান হাদি লিখেছিলেন, “গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টা বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে। যার সামারি হলো- আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে। আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।”







