নতুন তোশাখানা (রাষ্ট্রীয় উপহার) মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
ডনের খবরে বলা হয়েছে, আজ শনিবার ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) একটি বিশেষ আদালত ইমরান ও বুশরাকে এই সাজা দেন।
এই মামলাটি ইতালির বিশালবহুল ব্র্যান্ড বুলগারির একটি ‘জুয়েলারি সেট’ কেনার সঙ্গে সম্পর্কিত।
ad-img
২০২১ সালের মে মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান সরকারি সফরে সৌদি আরবে গেলে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইমরানকে বুলগারির ওই জুয়েলারি সেটটি উপহার দিয়েছিলেন। পরে ইমরান নামমাত্র মূল্য দিয়ে সেটি নিজের কাছে রেখে দেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান তিনি।
এই মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইমরান মাত্র ২৯ লাখ রুপির বিনিময়ে ওই জুয়েলারি সেটটি নিয়ে নেন। অথচ এটির বাজারমূল্য প্রায় ৮ কোটি রুপি।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে তোশাখানা–২ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে শনিবার বিশেষ আদালতের বিশেষ বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ এ রায় দেন। ইমরান খান বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন।
ইমরান খানকে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে পাকিস্তান পেনাল কোডের ধারা ৩৪ (সাধারণ অভিপ্রায়) ও ৪০৯ (বিশ্বাসভঙ্গের অপরাধ) অনুসারে। আর সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ধারা ৫(২) অনুযায়ী, যা সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধমূলক আচরণ সম্পর্কিত।
বুশরা বিবিকেও একই ধারার অধীনে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও উভয়কে ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে অতিরিক্ত কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আদালতের রায়ের একটি অনুলিপি ডনের হাতে এসেছে। সে অনুযায়ী রায়ে বলা হয়েছে, আদালত রায় ঘোষণার সময় ইমরান আহমেদ খান নিয়াজির বয়স এবং বুশরা ইমরান খানের নারী হওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছেন। এই দুটি কারণের পরিপ্রেক্ষিতে সাজা কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইমরান ও বুশরার আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে তোশাখানা–২ দুর্নীতি মামলা করা হয়। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ইমরান ও বুশরা উভয়ই এই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। এটিকে তাঁরা রাজনৈতিক কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা বলে দাবি করেছিলেন।
২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী আছেন ইমরান খান। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে, কয়েকটির বিচার চলছে, কয়েকটির সাজা ঘোষণা হয়েছে।