জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬২

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬২

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে এখন পর্যন্ত ৬২ জন নিহত হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এতে বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে, ভবনে আগুন ধরেছে এবং রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও বিভিন্ন স্থানে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল জাপানের মধ্যাঞ্চলীয় নোটো দ্বীপে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইশিকাওয়া প্রিফেকচার। সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুতহীন।

ধসে পড়া বাড়ির নিচে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে, এই সপ্তাহে একই ধরনের তীব্র ভ‚মিকম্প হতে পারে।

ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের ওয়াজিমা শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, ২৫টি বাড়ি ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের কারণে ওয়াজিমায় প্রায় ২০০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

কাছাকাছি সুজু সিটিতে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, ৫০টিরও বেশি বাড়ি ভেঙে মিশে গেছে। ওয়াজিমা ও সুজু উভয় হাসপাতালেই আহতদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রিফেকচারের হাজার হাজার মানুষ এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। কিছু এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাসিন্দারা পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

ভূমিকম্পটি কাদা ধসেরও সৃষ্টি করেছে যা উভয় শহরের প্রধান রাস্তাগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। কিছু রাস্তা বন্ধ রয়েছে। কিয়োটো ইউনিভার্সিটির একজন সিসমোলজিস্ট গোটো হিরোয়ুকি বলেছেন, সোমবারের ভূমিকম্পের পর কয়েকটি ছোট কম্পন অনুভূত হয়। তিনি বলেছেন, তাই সোমবারের ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৬ বললেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। গত দুই দিনে এই অঞ্চলে ২১০টির বেশি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

কর্মকর্তারা জনগণকে আগামী ৭ দিন বা তার বেশি সময়ে জাপানি স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের বিষয়ে সতর্ক করেছে। জাপানি স্কেলে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত গণনা করা হয়। সেখানে ৭ সবচেয়ে শক্তিশালী।

স্থানীয় জনপরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর ইশিকাওয়া প্রায় ৩৪ হাজার পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এখনো অনেক পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় পানি সরবরাহের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টার বন্ধ থাকার পর শিনকানসেন বুলেট ট্রেন পুনরায় চলতে শুরু করেছে।

পৃথিবীর যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয় জাপানে। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই দেশটিতে বেশি ভূমিকম্প হয়। দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে দুই হাজারের মতো ভূমিকম্প সংঘটিত হয়ে থাকে। ভূমিকম্পগুলোর অধিকাংশই ক্ষীণ হয়ে থাকে। তবে দেশটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পকের অনেক রেকর্ড রয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email