আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হলে উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে ৪টা ৪৫ মিনিটে টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি নির্বাচনী তথ্য-অনুসন্ধানী প্রতিনিধিদলের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিনিধি দলের প্রধান প্রতিনিধি সিনিয়র ইলেকশন এক্সপার্ট রিকার্ডো সেলেরির (Riccardo Chelery) নেতৃত্বে ৭-সদস্যবিশিষ্ট দলে ছিলেন হেড অব সেক্টর ( বেলজিয়াম) রেজিনাল্ড সোয়েনেন (Reginald Soenen), পলিসি অফিসার, (জার্মানি) ফ্রেডেরিক শুমান (Frederik Schumann), টিম লিডার (সুইডেন) মেটে বাকেন (Mette Bakken), লিগ্যাল এক্সপার্ট (অস্ট্রিয়া) জোয়াকিম ম্যানুয়েল ওয়ালি (Joachim Manuel Wally), লজিস্টিকস এক্সপার্ট (পর্তুগাল) টেরি মারে পিন্টো (Terry Murray Pinto), সিকিউরিটি এক্সপার্ট (যুক্তরাজ্য) ইয়ান জেমস মিলার (Ian James Miller)।
প্রতিনিধি দলটি আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে করণীয় সম্পর্কে মেয়রের ব্যক্তিগত মতামত জানতে চাইলে মেয়র বলেন, “আমার মতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ অপরিহার্য। এজন্য ১০টি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। তা হল স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তথা নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে। সব দলের জন্য সমান সুযোগ তথা শাসক দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করবে না এবং বিরোধী দলগুলোকে ভয়ভীতি ছাড়া প্রচার চালাতে দিতে হবে।
“ সঠিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটার তালিকা তথা হালনাগাদ ও নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে যাতে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বাদ না পড়ে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা তথা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, প্রশাসনসহ সব বাহিনীকে অরাজনৈতিক থাকতে হবে। তাদের ভূমিকা হবে নিরাপত্তা দেওয়া, ভয় সৃষ্টি নয়। মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তথা সাংবাদিকরা যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কাভার করতে পারেন। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।”
মেয়র আরো নিশ্চিত করতে বলেন, সক্রিয় নাগরিক সমাজ ও পর্যবেক্ষক তথা দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক সমাজকে ভোটার সচেতনতা ও অনিয়ম প্রতিবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়া তথা মনোনয়ন থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছ হতে হবে। বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা তথা নির্বাচনী বিরোধ দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি তথা শাসক ও বিরোধী দলকে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন করতে হবে। ভোটার শিক্ষা ও অংশগ্রহণ তথা ভোটারদের তাদের অধিকার ও ভোটদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এ ১০ টি বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত হবে যার ফলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান এবং প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী।