শিকাগো ফায়ারের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে পাঁচ গোল হজম করে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইন্টার মায়ামি। এবার মাত্র এক গোল হজম করেছে তারা, আর লিওনেল মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে (তিনটি অ্যাসিস্ট) নিউ ইংল্যান্ড রেভোলিউশনকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে মায়ামি।
কোচ হাভিয়ের মাচেরানো তার একাদশে তিনটি পরিবর্তন আনেন, যা দলের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। সেন্টার-ব্যাক টমাস আভিলেস ও গনসালো লুজান ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি সাধারণত লেফট-ব্যাক হিসেবে খেলা নোহ অ্যালেনকে ম্যাক্সি ফালকনের সঙ্গে ডিফেন্সে নামান। পাশাপাশি মেসিকে নামানো হয় মিডফিল্ডে, এক ধরনের ওয়াইড প্লেমেকারের ভূমিকায়। গোলবারে রোকো রিওস নোভোকে নামানো হয়, যিনি অস্কার উস্তারির জায়গা নেন।
মেসি গোল থেকে খানিকটা দূরে খেললেও সৃজনশীলতায় হয়ে ওঠেন আরও কার্যকর। কয়েকটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হওয়ার পর ৩২তম মিনিটে অবশেষে মায়ামিকে তিনি সহায়তায় এগিয়ে দেন। চোখ ধাঁধানো এক ‘নো-লুক’ থ্রু পাসে তাদেও আলেন্দেকে খুঁজে নেন মেসি, আর আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জোরালো শটে ইউএসএ গোলরক্ষক ম্যাট টার্নারকে পরাস্ত করেন।
১২ মিনিট পর গোল করেন মেসি নিজেই, কিন্তু লুইস সুয়ারেজ অফসাইডে থাকায় সেটি বাতিল হয়। তবে কয়েক সেকেন্ড পরেই আরেকটি দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট করেন তিনি—চমৎকার এক ব্যাকহিলে জর্দি আলবার পা খুঁজে দিয়ে স্কোরলাইন ২-০ করেন।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯তম মিনিটে কিছুটা ম্যাচে ফেরে নিউ ইংল্যান্ড। নতুন সাইনিং দোর তুরগেমান দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে গোল করেন। রদ্রিগো দে পল ও সের্হিও বুসকেতসের ঢিলেমির সুযোগ নিয়ে ফালকনকেও কাটিয়ে দুর্দান্ত গোলটি করেন তিনি।
কিন্তু মায়ামি সঙ্গে সঙ্গেই আবার জবাব দেয়। কিক-অফের পরপরই মেসি ভাসিয়ে দেন দারুণ এক ডায়াগোনাল বল, যা ধরে আলেন্দে আবারও টার্নারকে পরাস্ত করে ব্যবধান ৩-১ করেন। গোলটি কার্যত ম্যাচ শেষ করে দেয়। শেষ দিকে বাজে ডিফেন্সিংয়ে আরেক গোল হজম করে রেভোলিউশন। তেলাসকো সেগোভিয়া দুইজনকে কাটিয়ে বল দেন আলবার কাছে, তিনি ঠান্ডা মাথায় গোল করে নিজের দ্বিতীয়টি পূর্ণ করেন।
৭৫তম মিনিটে আবেগঘন একটি মুহূর্ত তৈরি হয়। মাচেরানো বুসকেতসকে পরিবর্তন করে তুলে নেন, যাতে অবসরের ঘোষণা দেওয়া এই কিংবদন্তি মিডফিল্ডার দর্শকদের কাছ থেকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন পান। শনিবার তার জন্য বিশেষ বিদায়ী আয়োজনও হবে।
এই জয়ের মাধ্যমে মেসির মৌসুমে গোল অবদান দাঁড়াল ৪১-এ। যদিও ফিলাডেলফিয়া ইতোমধ্যেই এনওয়াইসিএফসিকে হারিয়ে সাপোর্টার্স শিল্ড নিশ্চিত করেছে, তবুও মায়ামির সামনে এখনো খেলার অনেক কিছু বাকি। ইস্ট কনফারেন্সে প্লে-অফে ঘরের মাঠের সুবিধা পেতে লড়ছে তারা। জয়টি তাদের কনফারেন্সে তৃতীয় স্থানে তুলেছে, তাও আবার একটি ম্যাচ হাতে রেখেই।