শেখ হাসিনার চেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট সন্তু লারমা

শেখ হাসিনার চেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট সন্তু লারমা

‘তিন পার্বত্য জেলায় প্রতিবছর ৭০০ কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন করে, যেগুলো দিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে পারতো।কিন্তু তারা সেগুলো ব্যয় করে অস্ত্র কেনায়’।বিগত বছরে তিন হাজারের কাছাকাছি হত্যা হয়েছে পার্বত্য জেলায়।আমরা-সিএইচটি সম্প্রীতি জোট দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি- বাংলাদেশ আমাদের সবার। পাহাড়-সমতলের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।

রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে রক্ষা করা এবং ভারতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের সমন্বয়ক থোয়াইচিং মং শাক এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, দেশে ৫০টা জাতি আছে, শুধু মুসলিম ছাড়া সবাই মিলে জোট হয়। কেন? আমরা সবাই বাংলাদেশি। সবাই মিলে একজাতি। কেউ আদিবাসী নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশি। একটা ভিনদেশী সন্তু লারমার সাথে কিভাবে চুক্তি করে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার চেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট সন্তু লারমা’।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত রাখার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। কখনো বাঙালি ও অ-বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা, কখনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই, কখনো আবার আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলা ঘটছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো-ভারতীয় সহযোগিতায় চাকমা জাতি পরিচালিত ইউপিডিএফ ও জেএসএস নামক সংগঠনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি, লোভ ও প্রলোভন দেখিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণে উৎসাহিত করছে। প্রতিবছর এসব সংগঠন কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, এমনকি সাধারণ কৃষক পর্যন্ত জিম্মি করছে। সেই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আনা হয়।

‘আবার অনেক নেতা পালিয়ে ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে এবং সেখান থেকেই “জুম্মল্যান্ড” প্রতিষ্ঠার নীলনকশা আঁকছে। প্রতিনিয়ত পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এসব সংগঠন। ইউটিউব, ফেসবুক ও অন্যান্য মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। মূল লক্ষ্য হলো-বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা’।

সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি কিছু দাবি ও করণীয় তুলে ধরেন। সেগুলো হলো:
জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা- বাঙালি ও অ-বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি রুখে দিয়ে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করতে হবে।ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা- বিদেশি অর্থায়ন ও প্রভাবিত সংগঠনগুলোর কার্যক্রম দৃঢ়ভাবে দমন করতে হবে।

রাষ্ট্রীয় নজরদারি বৃদ্ধি- সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি শক্তিশালী করতে হবে।শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন- স্থায়ী শান্তির জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ বাড়াতে হবে।

সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি- পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি ও পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে হবে।সংস্কার কমিশনের ভূমিকা- আদিবাসী, উপজাতি, জুম্ম, সেটেলার বাঙালি ইত্যাদি বিভাজনমূলক শব্দ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি।

ভারতপন্থী ইউপিডিএফ ও জেএসএস কর্তৃক পরিচালিত সব ধরনের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও বিদেশি ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ে শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় সরকার ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুখ্য সমন্বয়ক পাইশিখই মারমা, সিএইচটি সদস্য অ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের সমন্বয়ক ইখতিয়ার ইমন, সমন্বয়ক জাফরুল হাসান, সমন্বয়ক রাকিব হোছাইন নওশাদ, সমন্বয়ক তন্ময় হোসেন (নাসির) প্রমুখ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email