বাংলাদেশে যেই সরকারই আসুক, তার সঙ্গে কাজ করবে ভারত-বিক্রম মিশ্রি

বাংলাদেশে যেই সরকারই আসুক, তার সঙ্গে কাজ করবে ভারত-বিক্রম মিশ্রি

ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বদা জনগণকেন্দ্রিক ও ভবিষ্যৎমুখী রাখতে আগ্রহী। দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, এমন আশা প্রকাশ করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

সোমবার দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (সাউথ ব্লক) আয়োজিত বাংলাদেশ কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাব-এর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে যেই সরকার ক্ষমতায় আসুক, তার সঙ্গে ভারত কাজ করতে সদা প্রস্তুত। তিনি আরও জানান, নির্বাচন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হলে তা দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ভারত বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার জন্য নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বৈধতা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের সম্পর্ক বহু পুরোনো, ‘সময় পরীক্ষিত’ এবং তা সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বন্ধনে দৃঢ়ভাবে চিহ্নিত। ভারত এই সম্পর্ককে সব সময় ‘জনমুখী’ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছে।

এ প্রসঙ্গে তারা বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথাও তুলে ধরেছে। বিক্রম মিশ্রি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের প্রথম বা অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান। একইসঙ্গে তাঁকে ‘ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ’ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান, যা ড. ইউনূস গ্রহণ করেন এবং এতে ভারত আনন্দিত হয়।

ভারতের কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে স্পষ্ট করার উদ্দেশ্যে এবং চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সফরও করেছেন। তার মতে, সফরটি ‘খুবই কার্যকর’ ছিল এবং ওই সময়কার পরিস্থিতি সম্পর্কিত অনেক বিষয় পরিষ্কার করতে সাহায্য করেছে।

তিনি আরও জানান, শুধু উচ্চপর্যায়ে নয়, দুই দেশের মধ্যে কর্মপদ্ধতিগত বৈঠক নিয়মিত হয়ে আসছে। এসব বৈঠকে সীমান্ত, নদ-নদী, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের আলোচনার সুযোগ খোঁজা হয়েছিল। আলোচনার বাস্তবায়ন সম্ভব হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ভারতে আসা অতিথিরা সফর থেকে ‘ফলপ্রসূ’ অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন এবং সবকিছু সঠিকভাবে ‘উপযুক্ত দৃষ্টিকোণ’ থেকে দেখতে সক্ষম হবেন।

ভারতের কর্মকর্তারা আলোচনা শুরুতেই দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি স্মরণ করিয়ে দেন। বিক্রম মিশ্রি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক পাঁচ দশকের বেশি পুরোনো এবং তিনি দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন যে, এই সম্পর্ক সব প্রতিকূলতার ঊর্ধ্বে জয়ী হবে এবং ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email