আসন্ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরমে কিন্তু এই প্রতিযোগিতায় অনেকেই মানছেন না নির্বাচনী আচরণবিধি। এবং কি চলমান রয়েছে নারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সাইবার বুলিং, হেনস্তার মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে মানসিক চাপও সৃষ্টি করছে একটি গুপ্ত সক্রিয় গোষ্ঠী।
এবার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার দ্বারা নির্বাচনী আচরণবিধিমালা ৫(গ) লঙ্ঘন করে অপপ্রচার ও সাইবার বুলিং এর মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হলটির এক স্বতন্ত্র নারী প্রার্থী। উক্ত হল থেকে যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে কেবল ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন একজন ইসলামী ছাত্রীসংস্থা সমর্থিত অভিযাত্রিক ছাত্রী ঐক্যের আয়শা সিদ্দিকা আরবী এবং অপরজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারিহা নানজিবা। দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা নানজিবা জানান, মূখ্যত উক্ত পদে কেবল ২ জন প্রার্থী থাকায় ছাত্রীসংস্থা সামাজিকভাবে এবং মানসিক ভাবে তাকে হেনস্তা করার মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করছে যাতে হল সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান বা তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তিনি আরও জানান, তার প্রার্থিতার মনোনয়ন দেওয়ার দুইদিন পর থেকেই তিনি সাইবার বুলিং ও হ্যারাসমেন্টের শিকার হচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত চরিত্রহনন মূলক অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর ইতোমধ্যে অভিযোগও করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে ফারিহা নানজিবা দৈনিক দিনকালের চবি প্রতিনিধি আল ইয়ামিম আফ্রিদি কে বলেন, আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল থেকে যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে প্রার্থিতা করছি। হলের একটি প্রাইভেট গ্রুপ থেকে আমাকে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি লিখিত দরখাস্ত আমি প্রমাণসহ দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন আমাকে নিশ্চিত করেছিল যে তারা এটার একটা প্রাথমিক ব্যবস্থা নেবে। যারা অভিযুক্ত তাদেরকে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে বলেও নির্বাচন কমিশন থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। এরপরও আমি হলের ভিতরে নির্বাচনী প্রচারণা করলে এই প্রচারণার কথা উল্লেখ করে আবারও আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ ও মিথ্যা অপবাদ রটানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে আমার বিরুদ্ধে বেনামি পোস্ট করা হচ্ছে এবং ছাত্রী সংস্থা এটিকে প্রমোট করছে। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু একজনই আছেন, যিনি ‘অভিযাত্রিক ছাত্রী ঐক্য’ (ছাত্রীসংস্থা সমর্থিত) থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদে প্রার্থিতা করছেন। আমি যাতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিই, তাই তারা এই কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, তারা সমাজিক ভাবে এবং মেন্টালি আমাকে অনেক বেশি প্রেসারাইজ করেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকে ট্রল করার যে উদ্দেশ্যটা সেটা ওদের (ছাত্রীসংস্থা) দ্বারাই সংগঠিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ইসলামী ছাত্রীসংস্থা সমর্থিত অভিযাত্রিক ছাত্রী ঐক্যের যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদ প্রার্থী আয়শা সিদ্দিকা আরবী সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয় জানতে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিনকেও মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলে ছাত্রীসংস্থার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান।