প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আসুন একটা উদাহরণ সৃষ্টি করি এই দেশে যে, আইনের শাসন কাকে বলে আমরা এই ইলেকশনে এটা দেখাতে চাই। তাতে যা হওয়ার হবে।নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর এস এস খালেদ রোডে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মিলনায়তনে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলছিলেন।চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. বশির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও ইউএনডিপি বাংলাদেশর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক।
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জসমূহ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়েছে।
সিইসি বলেন, তবে আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে ভোট গ্রহণের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জেস। নিরাপত্তা এটা একটা বিরাট আকারে দেখা দিয়েছে। এটা নিয়ে সবাই দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছে। এটা মোকাবিলাটা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়াবে।
আপনারা যারা প্রিজাইডিং অফিসার হবেন, যেদিন ইলেকশন হবে, সর্বময় ক্ষমতা আপনাকে দেওয়া আছে। রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে সব ধরণের ক্ষমতা দেওয়া আছে। যদি গোলমাল করে সেন্টার বন্ধ করে দিবেন। তিনটা গোলমাল হলে তিনটা সেন্টার বন্ধ করে দিবেন। দরকার হলে পুরো আসনে বন্ধ করে দিবেন।”নির্বাচন ঘিরে কিছু প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন সিইসি।
তিনি বলেন, “কাকে নিয়োগ করব, কোথায় নিয়োগ করব। কিছু চ্যালেঞ্জ আছে আইনগত। কোন সেন্টারে গোলমাল হল, কার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিব। কি অ্যাকশন নিব।তারপরে ধরেন টেকনোলজিক্যাল চ্যালেঞ্জেস আছে। ক্যামরার কথা আসছে, ট্র্যাকিং করা। এআই আসছে, এগুলো মোকাবিলা করা।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা সহজে ছাড়ার পাত্র নই। সহজে ছাড়ব না। আপনাদের পিছনে আমরা আছি। ইলেকশন কমিশন ফুল সাপোর্ট দিয়ে যাব আপনাদের। আমি নিশ্চিত করছি।
যেটা লাগবে, আইনের পুরো কর্তৃত্ব নিয়ে আইনটা রিসার্চ করবেন। এটা করতে হলে, আপনি নিরপেক্ষ আছেন এটা প্রমাণ দিতে হবে। আপনার কর্মকাণ্ডে যদি ধারণা পায় আপনি বিশেষ দল বা ব্যক্তির জন্য কাজ করছেন তাহলে কিন্তু আপনার আইনি ও নৈতিক শক্তি দুর্বল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ইসি প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের ‘ক্ষমতায়িত’ করতে চায়।যদি আপনি ক্ষমতা ব্যবহার না করেন তাহলে এটা কিন্তু আমরা অপরাধ হিসেবে নিব। যদি যথাসময়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা না নেন, তাহলে কিন্তু আমরা এটাকে ভালো চোখে দেখব না। কারণ আপনার ক্ষমতা থাকাটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ক্ষমতা ব্যবহার করাটাও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ইসি চাইছে, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের যার যা ক্ষমতা তারা সেটা ব্যবহার করুক।আসুন একটা উদাহরণ সৃষ্টি করি এই দেশে যে, আইনের শাসন কাকে বলে আমরা এই ইলেকশনে এটা দেখাতে চাই। তাতে যা হওয়ার হবে।
ইলেকশন কমিশন আপনাদের পাশে, পিছনে ও সাথে আছে। যে কোন পরিস্থিতিতে আপনি যদি আইনের অধীনে থেকে বিধি অনুযায়ী কাজ করবেন। নির্বাচন কমিশন আপনাদেরকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে। সেই নিশ্চয়তা আপনাদের দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ পরামর্শ আসছে নিরাপত্তা বিষয়ক। ভালো নির্বাচন করতে হবে, এর কোন বিকল্প নাই।
আমরা একজন আরেকজনকে যে দোষ দিই, আমরা কি ভাবি নিজে কতটা দোষী? আমরা কখনো প্রভাবিত হয়েছি। কখনো ভবিষ্যতে ক্ষমতার সংস্পর্শে থাকব এতে প্রভাবিত হয়েছি। এখন কোন ভয় নাই। কারণ সরকার বলছে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।