বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটি এবং ইনডিপেন্ডট বিশ্ববিদ্যালয় স্কোয়াশ কমপ্লেক্সে জাঁকজমক আয়োজনে শুরু হয়েছে "৫ম জাতীয় স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২৫"। সোমবার ১৩ অক্টোবর বিকালে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া প্রধান অতিথি হিসাবে টুনামেন্টের জার্সি উন্মোচন এবং বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগীতার পুরুষ অংশ সহ মুলপর্ব উদ্বোধন করেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জি এম কামরুল ইসলাম, এসপিপি (অব)-সহ নির্বাহী কমিটির সদস্যগন, উর্মী গ্রুপের পরিচালক ফায়েজ রহমান সহ উর্ধতন কর্মকর্তা, বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির পরিচালক মেজর মহসিনুল করিম (অব:)-সহ উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং অভিভাবকসহ প্রচুর দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এরপূর্বে সকালে ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক ব্রি, জে, কামরুল ইসলাম এবং আইইউবি-র পরিচালক আশরাফ উদ্দিন ও অন্যান্য কর্মকর্তাগন প্রতিযোগীতার মহিলা অংশের উদ্বোধন করেন।
উর্মি গ্রুপ ও Turaag Active-এর স্পন্সরশীপে বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশন পঞ্চম বারের মত জাতীয় স্কোয়াশ প্রতিযোগীতার আয়োজন করছে। চার দিন ব্যাপি চূড়ান্ত রাউন্ডের প্রতিযোগীতা রাউন্ডরবিন লীগ ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে। ০১ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপি আয়োজিত আঞ্চলিক/প্রথম পর্বে ২৫টি ক্লাব/প্রতিষ্ঠানের রেকর্ড সংক্ষক ১৮০ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে বিজয়ী ও নির্বাচিত ৮০ জন খেলোয়াড় নিয়ে নয়টি গ্রুপে শীরোপার চূড়ান্ত লড়াই হবে। চূড়ান্ত পর্বের গ্রুপগুলো হ'ল উন্মুক্ত (মহিলা), উন্মুক্ত (পুরুষ), উন্মুক্ত (মেম্বার) এবং ১১ বছরের নীচে, ১২-১৩ বছর, ১৪-১৫ বছরের ছেলে ও মেয়েদের পৃথক পৃথক গ্রুপ। ১৬ অক্টোবর বিকাল চার ঘটিকা থেকে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হবে।
চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী ক্লাব/প্রতিষ্ঠান হ'ল, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আই ইউ বি, মিরপুর আইডিয়াল কমার্স কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, ভাষানটেক সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ, শহীদ আনোয়ার কলেজ, ভাষানটেক স্কুল, কালশী ইসলামিয়া হাই স্কুল, গোল্ডেন বাংলা আইডিয়াল স্কুল, ফাতেমা আজিজ স্কুল, জামুরীপাড়া স্কুল, ঠাকুরগাঁও, মিরপুর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, নির্ঝর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, কালাচাঁদপুর স্কুল এন্ড কলেজ, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, চট্টগ্রাম ক্লাব, হবিগন্জ উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তরা পুলিশ কলেজ, ঢাকা স্কোয়াশ একাডেমি, ইত্যাদি।
উন্মুক্ত পুরুষ গ্রুপে উত্তরা ক্লাবের সুমন ও আরিফ; গুলশান ক্লাবের সৈকত; চট্টগ্রাম ক্লাবের সাইফুল: বিকেএসপির সাইমুন, পারভেজ, আমিনুল এবং আর্মির রনি, শাহাদাৎ, মাসুম, আপন, রাকিব, আজিজ, নায়েব, সাজ্জাত ও শরিফ প্রমুখ; উন্মুত মেয়েদের গ্রুপে আই ইউ বি-র উর্ধু ও জ্যতি; শহীদ আনোয়ার কলেজের রাফিয়া; নির্ঝর স্কুলের নাবিলা; উত্তরা পুলিশ কলেজের চাঁদনী সরকার এবং ভাষানটেক স্কুলের ফাহমিদা ও মেঘনা; গোল্ডেন বেঙ্গল স্কুলের মীম, প্রমুখ এবং উন্মুক্ত মেম্বার গ্রুপে ফজলে ওয়ালী, ওয়ালিদ হাসান, জাকির মো: হোসাইন, মো: আবু কায়সার, আশিকুর রহমান, মো: রায়হান, ব্রি, জে, আজিজ, মো: আহসান, লে: কর্নেল সামস, মোহামেন হক আলিফ, ব্রি, জে, আসাদ, সাদমান উদ্দিন খান, ব্যারেষ্টার সারোয়ার ও মো: মবিন আগামী চার দিন নিজ নিজ গ্রুপে শ্রেষ্টত্বের জন্যে লড়াই করবে।
বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির স্কোয়াশ কমপ্লেক্সের সুযোগ-সুবিধার ব্যবহার এবং ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের সাপোর্ট লাভের শর্তে বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশন সম্প্রতি বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির (বসুন্ধরা গ্রুপ) সাথে পাঁচ বছরের জন্যে একটি এমওইউ স্বাক্ষর করেছে। স্কোয়াশ ফেডারেশনে নিজস্ব খেলার মাঠ বা কমপ্লেক্স না থাকায় তারা সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন ক্লাবের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে বিধায় বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির সুবিধা বাংলাদেশ দেশের স্কোয়াশ খেলার অনুশীলনসহ প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য দেশের স্কোয়াশ খেলোয়াড় সরবরাহের মুল এলাকা কালশী, ভাষানটেক ও রজনীগন্ধার খেলোয়াড়দের অধিকাংশই সুবিধাবঞ্চিত নাজুক আর্থ-সামসজিক পরিবারের সন্তান। তারপরেও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া সন্তানদের উল্লেখযোগ্য হারে স্কোয়াশ খেলায় অংশগ্রহণ প্রমান করে যে স্কোয়াশ একটি সম্ভাবনাময় খেলা যা বাংলাদেশে গণমানুষের খেলা হতে পারে।
প্রধান অতিথি নিয়মিত জাতীয় প্রতিযোগীতা আয়োজনের জন্যে স্কোয়াশ ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে, গত চার বছর আমাদের দেশে স্কোয়াশ যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সামনে যে সুদিন আসবেই। ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক বলেন যে স্কোয়াশকে দেশ ব্যাপি ছড়িয়ে দেওয়া এবং নতুন খেলোয়াড় তৈরি করে খেলার মান উন্নয়ন, প্রচার ও প্রসার ঘটিয়ে বাংলাদেশের স্কোয়াশকে পর্যায়ক্রমে আন্তর্জাতিক মানে নেওয়ার লক্ষে এই প্রতিযোগীতার আয়োজন। স্পন্সর গ্রুপের প্রতিনীধি ফায়েজ রহমান বলেন, যে দেশের মৃত্যু প্রায় স্কোয়াশ খেলার সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে উর্মিগ্রুপ নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করে। তিনি আরো বলেন যে খেলাটির প্রচার ও প্রসারের সাথে আগামী দিনগুলোতেও উর্মিগ্রুপ ফেডারেশনের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে মেজর মোহাসিন করিম বলেন যে, বাংলাদেশে মৃত্যপ্রায় স্কোয়াশ খেলাকে পুনরুজ্জীবিত করনে স্কোয়াশ ফেডারেশনের পাশে থাকতে পেরে বসুন্ধরা গ্রুপ নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছে।
রেকর্ড সংখ্যক খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ এবং সম্প্রতি এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়ানশীপ এবং নেপালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতা থেকে পুরস্কার অর্জন প্রমান করে যে গত চার বছরে বাংলাদেশে স্কোয়াশ খেলার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ফেডারেশনকে এই ধারা অব্যহত রাখতে এবং আরো বিস্তৃত ও বেগবান করতে হবে। আমরা আশা করতে পারি যে এই প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহনকারী বয়স ভিত্তিক স্কোয়াশ খেলোয়াড়রাই আগামীদিনে জাতীয় দলে খেলে বাংলাদেশের মান-সন্মান বৃদ্ধি করবে ইন-শা-আল্লাহ।