নতুন এই বেতন কাঠামো চালু হলে শুধু বেতনের অংক বাড়বে না, পাশাপাশি চিকিৎসা, শিক্ষা, পদোন্নতি ও অন্যান্য ভাতায় আসবে কাঠামোগত পরিবর্তন। তবে একাধিক পুরোনো আর্থিক সুবিধা বাতিলের প্রস্তাবও উঠে এসেছে।
পে-কমিশনের প্রাথমিক খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, বর্তমান বহুবিধ ভাতা ও সুবিধার পরিবর্তে একটি সমন্বিত বেতন কাঠামো, যাকে বলা হচ্ছে ‘সাকুল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক পদ্ধতি’। এই পদ্ধতিতে কর্মকর্তারা আর আলাদা কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না- সব কিছুই থাকবে একক কাঠামোর মধ্যে।
এই মডেলটি বিশ্বের অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে বেতনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে সব সুবিধা একত্রিত থাকে, ফলে আলাদা ভাতা ব্যবস্থাপনা ও অতিরিক্ত ব্যয়ের ঝামেলা থাকে না।
বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে সম্মানীভাতা পান। যদিও এ ভাতা অনেক সময় দায়িত্বের অংশ হিসেবেই দেওয়া হয়, তবুও এতে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে এ সম্মানীভাতাকে ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে বাতিলের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। মূল দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবেই এই কাজগুলো সম্পাদনের কথা, তাই অতিরিক্ত সম্মানী বা ভাতা দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বেতন কাঠামোর প্রস্তাবিত সীমা
সর্বনিম্ন বেতন: ২৫,০০০ টাকা
এই প্রস্তাব অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে পে-কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। আজ এই বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে সমিতির নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সাবেক গভর্নর ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পে-কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ রাখা হবে ডিসেম্বরে বাজেট সংশোধনের সময়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গেজেট প্রকাশের পরই এটি কার্যকর হতে পারে এবং আগামী বছরের শুরু থেকেই নতুন কাঠামোর সুবিধা পেতে পারেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
নতুন জাতীয় বেতন স্কেল শুধুমাত্র অর্থ বৃদ্ধিই নয়, বরং ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও সাশ্রয়ের দিকে এক বড় পদক্ষেপ। তবে এতে কিছু চলমান সুবিধা বাতিল হওয়ায় বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে সরকারি মহলে। শেষ পর্যন্ত কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ ও সরকারের সিদ্ধান্তই বলে দেবে, কোন সুবিধা থাকবে আর কোনটি বাদ যাবে।