সাত দিনব্যাপী এসডিজি ফেস্টিভ্যাল অফ একশনের সমাপনী অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সম্পন্ন হয়। এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম’র উদ্যোগে ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসা সহ প্রায় ৫০টি সামাজিক ও যুব সংগঠনের সহযোগিতায় সম্পন্ন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ, ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম’র সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার’র সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি এ.এম.মাহবুব চৌধুরী, শিল্পোদ্যোক্তা সৈয়দ নাসির ও বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের পরিচালক আলী আকবর।
এসডিজি’র বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় পলিসি ডায়ালগ। টেকসই নগর বিষয়ক পলিসি ডায়লগে অংশ নেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিম, পরিবেশবিদ জাফর আলম, শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও এনআইটি চেয়ারম্যান আহসান হাবীব। ক্লাইমেট একশন এবং নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন বিষয়ক পলিসি ডায়লগে অংশ নেন চট্টগ্রাম ওয়াসা’র প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম, চট্টগ্রাম সার্কেলের বন সংরক্ষক ড. মোল্ল্যা রেজাউল করিম, ওব্যাট হেল্পার্সের কান্ট্রি ম্যানেজার সোহেল আকতার খান ও মাহফুজুর রহমান। জেন্ডার সমতায় ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট নাসরিন নাহার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরী, নারী উদ্যোক্তা ফারহানা হক ও মোঃ তাহসিনুল ইসলাম। সম্প্রীতি ও শান্তি বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর এ.ওয়াই.এম.ডি জাফর, ইপসা’র উপ-পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম, প্রাবন্ধিক সৈয়দ মোহাম্মদ জুলকরনাইন, সংগঠক ও উদ্যোক্তা এম এ সবুর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ইয়ুথ লিড ওয়াসিউর রহমান তন্ময়, এমরোজ গোমেজ, মিনহাজুর রহমান শিহাব। উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ অর্জনে তরুণরাই পরিবর্তনের অগ্রদূত। তরুণদের সম্মিলিত উদ্যম, প্রচেষ্টা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে টেকসই সমাজ, শহর ও রাষ্ট্র কাঠামোর অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে হবে। পলিসি ডায়লগে বক্তারা বলেন, তরুণ প্রজন্মকে সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চা বাড়াতে হবে। শান্তি মানে শুধু সংঘাতের অনুপস্থিতি নয়, বরং পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সামাজিক ঐক্যের প্রতিষ্ঠা। গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা এবং উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার ও নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পানি ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে আরও টেকসই করতে এখনই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। প্রতিটি তরুণ-তরুণীর জন্য দক্ষতা উন্নয়ন, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে নারী, প্রতিবন্ধী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকেও শ্রমবাজারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উন্নয়নের সুফল যেন সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টিত হয়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। পরিবার থেকে কর্মক্ষেত্র সব জায়গায় নারী-পুরুষের সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তন প্রয়োজন। জেন্ডার সমতা অর্জন মানেই একটি ন্যায্য সমাজের পথে এগিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশে অভিযোজন, প্রশমন ও পুনরুদ্ধারমূলক উদ্যোগে তরুণদের সম্পৃক্ততা জরুরি। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ও স্থানীয় উদ্ভাবনই টেকসই জলবায়ু পদক্ষেপের ভিত্তি হতে পারে।