নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত না হওয়ায় অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে- বৃহত্তর সুন্নী জোট

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত না হওয়ায় অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে- বৃহত্তর সুন্নী জোট

বৃহত্তর সুন্নী জোটের উদ্যোগে অদ্য ৩ নভেম্বর ‘২৫ সোমবার বেলা ১১ টায় ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব জহুরুল হক হলে আহুতসংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর সুন্নী জোট নেতৃবৃন্দ বলেন-নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ফেব্রুয়ারী ‘২৬ এ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়া হলেও এখনো চুড়ান্ত তারিখ ঘোষণা না করাতে অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। অদ্যাবধি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনরূপ ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। জাতির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযে করে বলেন- গত দেড় দশকে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলো ছিল বিতর্কিত। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত
হয়েছিল উল্লেখ করে আরও বলেন- প্রশাসনে অতীতের পুনরাবৃত্তিই দৃশ্যমান হচ্ছে। রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, বিনা বিচারে
হত্যা, মব সহিংসতা ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে
আনতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আবশ্যক। সুন্নী জোট নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে একের পর এক
শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে উৎপাদন স্থবির হয়ে পড়েছে। μমাগত বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমদানী- রপ্তানী শ্লথ হয়ে পড়েছে।
ডলার সংকট ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সংবাদ সম্মেলনে জোট নেতৃবৃন্দ দাবি
করেন- অন্তর্বর্তী সরকারের ১৫ মাস অতিμান্ত হলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা পায়
নি। এমনকি বিচারব্যবস্থায় অবৈধ হস্তক্ষেপ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তাহীনতা ভয়াবহ
আকার ধারণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর সুন্নী জোটের ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
১। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা। ২। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে একই দিনে গণভোট এর
আয়োজন করা।৩। রাষ্ট্রীয় যে কোন বৈঠকে সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। ৪। নির্বাচন এর পূর্বে
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করা। ৫। দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, অর্থ পাচারকারী ও আদালতে
দ-িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। ৬। জুলাই হত্যাকা-ের বিচার সুনিশ্চিত করা। ৭। দেশের অখ-তা ও সার্বভৌমত্বের
প্রশ্নে পার্বত্য জেলাগুলোকে বিদেশি মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। ৮। চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক
টার্মিনালগুলোকে ৩০ বছরের জন্য বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়া এবং দেশীয় লুটেরাদের হাত থেকে রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ
গ্রহণ। ৯। জাতির সার্বভৌমত্বের স্বার্থে সন্ত্রাসী আরকান আর্মির প্রয়োজনে কোনপ্রকার করিডোর না দেয়া। ১০। মাজার, খানকা,
দরবার শরীফ ও ধর্মীয় নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ১১। মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষা ও মহান
স্বাধীনতার ইতিহাস সংরক্ষণ করা। ১২। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।১৩। নির্বাচনকালীন
প্রশাসনকে দলনিরপেক্ষভাবে পুনর্গঠন করা।বৃহত্তর সুন্নী জোট এর উপরোক্ত দাবির পক্ষে জনমত গঠনে মাঠ পর্যায়ে নি¤েœাক্ত
কর্মসূচি ঘোষণা করছে-
১৫ নভেম্বর ২০২৫: চট্টগ্রামে বিশাল জনসভা
২৯ নভেম্বর ২০২৫: কুমিল্লায় জনসভা
৩০ নভেম্বর ২০২৫: হবিগঞ্জে জনসভা
৩ ডিসেম্বর ২০২৫: নারায়ণগঞ্জে জনসভা
২০ ডিসেম্বর ২০২৫: ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের নেতা ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস
সামাদ, সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন- জোটের নেতা ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল
আবেদীন জুবাইর এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন-ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এম ইবরাহীম আখতারী, বাংলাদেশ সুপ্রীম
পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মাও. আশেকুর রহমান হাশেমী, মাও. রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, আল্লামা মোশাররফ হোসেন
হেলালী, এডভোকেট ইকবাল হাসান, ঢালি কামরুজ্জামান হারুন, মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম, মোহাম্মদ ইব্রাহীম মিয়া, ডা. অধ্যক্ষ
এস এম সরওয়ার, এস এম তারেক হোসাইন, অধ্যক্ষ আবু নাসের মোহাম্মদ, এস এম বারী মুসা প্রমূখ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email