চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-০৮ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এরশাদ উল্লা পাঁচলাইশ চালিতাতলী বাজার এলাকায় খোন্দকার পাড়ায় গণসংযোগের সময় এরশাদ উল্লাহর তার সাথে থাকা সরোয়ার হোসেন বাবলা ও ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক শান্ত গুলিবিদ্ধ হন।এ সময় এরশাদ উল্লাহর পায়ে গুলি লাগে।মেডিকেলে বিএনপির কর্মী সরোয়ার হোসেন বাবলা কে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।শান্তের অবস্থা আশংকা জনক।বুধবার (৫ নভেম্বর) মাগরিব নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় নেতাকর্মীরা এরশাদ উল্লাহকে উদ্ধার করে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, দুজন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে এসে এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগ করার সময় সরোয়ার বাবলার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় আহত হন শান্ত নামে এক স্বেচ্ছাসেবক দলেন নেতা।ঐ সময় লোকজন ভীত হয়ে ছুটাছুটি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিএনপির এমপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে ঘটনার পর আহত এরশাদ উল্লাহকে চট্টগ্রামের বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।পূর্ব বিরোধের অংশ হিসেবে কারাগারে থাকা চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের গ্রুপ সরওয়ার বাবলাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।তিনি দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবী জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার খবর পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন জানান, এরশাদ উল্লাহ বায়েজিদ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। এই সময় দুর্বৃত্তরা এসে গুলি করেছে। এতে এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে কেন এ ঘটনা ঘটছে তা জানি না। এরশাদ উল্লাহকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, নির্বাচনী প্রচারণাকালে জামায়াত-শিবিরের লোকজন এরশাদ ভাইকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। এ সময় সরোয়ার বাবলা ঘটনাস্থলে মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এখনো আমি নিশ্চিত হতে পারিনি।
আবু সুফিয়ান বলেন,চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম ৮ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদুল্লাহর নির্বাচনী গণসংযোগে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণে উনার আহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি। উনার আশু সুস্থতা কামনা করছি। অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত দায়ী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-এর বিবৃতি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগকালে আজ বিকেলে দুস্কৃতিকারিদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তথ্যমতে এ সময় আরও একাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই অমানবিক ও নৃশংস ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুস্কৃতিকারিরা আবারো দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুস্কৃতিকারিদের নির্মম হামলায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহসহ আরও একাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাই এসব দুস্কৃতিকারিদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই। গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দল, মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওঁত পেতে থাকা দুস্কৃতিকারিরা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে।”
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে এরশাদ উল্লাহসহ অন্যান্য গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের ওপর হামলাকারী দুস্কৃতিকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান এবং গুলিতে আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।