শীতকালের সঙ্গে যেন বিয়ের একটা মধুর সম্পর্ক আছে। বছরের যেকোনো সময়ের তুলনায় এসময়েই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। কিন্তু শীতকালেই কেন এত মানুষ বিয়ে করেন? অনেকে মনে করেন, আবহাওয়ার স্বস্তি থেকে শুরু করে নানা লজিস্টিক সুবিধার জন্য সব মিলিয়ে শীতকালই বিয়ের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক সময়।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক শীতকালে বিয়ের সুবিধা
*ডিসেম্বর মাসে স্কুল-কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়, শুরু হয় লম্বা ছুটি। এই সময়ে কর্মজীবী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত সবাই কিছুটা অবসর পান। ফলে দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা আত্মীয়-পরিজনদের একই ছাদের নিচে পাওয়া যায়, যা অন্য সময়ে কঠিন।
*বিয়ের আয়োজন মানেই শত রকম ব্যস্ততা দাওয়াত, সাজসজ্জা, খাওয়াদাওয়া, আয়োজন পরিচালনা ইত্যাদি। গরমের সময় সামান্য পরিশ্রমেও ক্লান্তি আসে, কিন্তু শীতকালে স্বস্তির কারণে সবাই প্রাণবন্তভাবে কাজ করতে পারেন।
*গরমের দিনে ঘাম বা আর্দ্রতায় মেকআপ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শীতকালে এই চিন্তা একেবারেই নেই। বর-কনে ও অতিথিরা সহজে সাজগোজে আরাম পান, মেকআপও দীর্ঘক্ষণ টেকে।
*পোলাও, বিরিয়ানি, রোস্ট বা রেজালার মতো ভারী খাবার শীতকালে বেশি উপভোগ্য হয়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি প্রায় থাকে না। সঙ্গে পিঠাপুলি ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী পদ যোগ হয়ে বিয়ের আয়োজনকে আরও মুখরোচক করে তোলে।
*গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, অর্কিডসহ বিভিন্ন ফুল শীতকালে সহজলভ্য হয় এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এতে ডেকোরেশন আরও রঙিন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়।
*এই সময় মৌসুমি ফল কম থাকায় ফলের প্লেট সাজানোর বাড়তি ঝক্কি থাকে না। ফলে আয়োজন সহজ ও খরচও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
*শীতকালে দিনের আলো কম থাকায় কাজগুলো সাধারণত দিনের মধ্যেই শেষ হয়। এতে সময় বাঁচে এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বা শ্রম খরচও কমে।
*শীতকালে ফ্যানের প্রয়োজন হয় না, তাছাড়া রাতের অনুষ্ঠান শেষে সবাই দ্রুত বিশ্রামে যান। ফলে বিদ্যুৎ বিলও তুলনামূলকভাবে কম আসে।
*শীতকালে মশা কম থাকায় মশারি টানানো বা স্প্রে করার বাড়তি ঝামেলা থাকে না। অতিথি ও নবদম্পতিরা নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারেন।
*শীতকাল ঘোরাঘুরির জন্য আদর্শ সময়। নবদম্পতিরা এই সময়ে আবহাওয়া উপভোগ করতে পারেন এবং দেশি-বিদেশি পর্যটনকেন্দ্রে আকর্ষণীয় কাপল প্যাকেজও পাওয়া যায়।
তবে সুবিধার পাশাপাশি অনেক অসুবিধাও আছে এ সময় বিয়ে করার। যা হয়তো কখনো আমরা খেয়াল করি না। জেনে নিন শীতকালে বিয়ের যতো অসুবিধা
*শীতকালে বিয়েবাড়িতে জমকালো পোশাক তো পরতে পারবেন, তবে তা কিন্তু হতে হবে ফুলহাতা। সেদিকে খেয়াল আছে তো!
*এ সময় যেহেতু অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান থাকে, তাই কমিউনিটি সেন্টারের ডেট পাওয়া বেশ ঝামেলার। আবার বাজেটও বেড়ে যেতে পারে অনেকটা।
*বিয়ে উপলক্ষে কনে বা বরের বাড়িতে আগত অতিথিদের থাকতে দেওয়ার ক্ষেত্রে এ সময় সমস্যার মুখে পড়তে হয়। রাতে যারা থাকবেন, তাদের জন্য লেপ-কম্বলের ব্যবস্থা করতে হয়।