দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করেছেন সহকারী শিক্ষকরা। একই সঙ্গে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা।
শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগের দাবি করেছে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ।
রোববার (৯ নভেম্বর) সংগঠনের পক্ষে শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ কর্মবিরতির এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।
তার আগে সকাল থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। বিকেলে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয়। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বহু শিক্ষক আহত হন।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো- সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
শিক্ষকেরা জানান, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ চত্বর অভিমুখে পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে কলম সমর্পণের কর্মসূচি ছিল তাদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দিলে তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান ব্যবহার করে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন। দুজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষকেরা যমুনা অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ শাহবাগে ব্যারিকেড দেয়। তারা সেটা ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, দুই-একজনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।