
নূর হোসেনের আত্মদানের মাস না পেরোতেই, ৬ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকার পতন ঘটে। তার মৃত্যুর পর ঢাকায় জনগণ তার স্লোগান এবং আদর্শকে বুকে ধারণ করে আন্দোলন চালিয়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত সফল হয়। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর, জনগণের আন্দোলনের চাপে এরশাদ সরকার পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
নূর হোসেনের শহীদ হওয়ার পর তিন বছর না পেরোতেই দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসে। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে।
নূর হোসেন যেখানে শহীদ হন, সেই জিরো পয়েন্ট আজ শহীদ নূর হোসেন চত্বর হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রতি বছর শহীদ নূর হোসেন দিবস পালন করা হয়, যাতে নতুন প্রজন্মের কাছে গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরা হয়।
নূর হোসেনের জন্ম ঢাকার নারিন্দায় এক অটো-রিকশাচালকের পরিবারে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে তিনি গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর, যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের মিছিল পল্টন এলাকায় পৌঁছায়, তখন পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং গুলি ছোড়ে। সেই সময়ে নূর হোসেনসহ যুবলীগ নেতা বাবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
তার আত্মত্যাগ এক নতুন সংগ্রামের সূচনা করে এবং তার বুকে-পিঠে লেখা স্লোগানগুলো তখনকার আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে।