
চট্টগ্রামের রাউজানে আলোচিত আবদুল হাকিম হত্যাকান্ডে ছয় আসামী দেশি বিদশী অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর ১০ নভেম্বর সোমবার গভীর রাতে রাউজান থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মেজর ইকবালকে গ্রেফতার করেন।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু বিপিএম-বার এর নির্দেশনায় রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ গভীর রাতে রাউজান পৌরসভা এলাকা হতে রাউজান থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামী মোঃ ইকবাল হোসেন চৌধুরী প্রকাশ মেজর ইকবাল (৫২)কে গ্রফতার করেন।
সে রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সুলতানপুরের আব্দুল কুদ্দুছ প্রকাশ কালু মেম্বারের সন্তান। চট্টগ্রামের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ইস্কান্দার হোসেনের ছোট ভাই মেজর ইকবাল। ইসকান্দার হোসেন নগরীতে সন্ত্রাসীদের হাতে কয়েক যুগ আগে নিহত হন। আওয়ামী সরকারের সময় রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মেজর ইকবাল।
সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ সভাপতি সাবের সুলতান কাজল বলেন সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই, রাউজানকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে পুলিশ প্রসাশন আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
রাউজান থানার পুলিশ জানান নথিপত্র পর্যালোচনায় আসামীর বিরুদ্ধে ৬টি হত্যা মামলা সহ দাঙ্গা-মারামারি ও অপহরণ সংক্রান্ত ১১টি মামলার বিবরণ পাওয়া গেলেও আসামির কথিত মতে তিনি রাউজান, ফটিকছড়ি এবং রাঙ্গুনিয়া থানায় খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সর্বমোট প্রায় ৪০টির অধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানিয়েছেন, কিছু মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন। বর্তমানে মামলা বিচারাধীন রয়েছে ১১টি। যার মধ্যে ছয়টি হত্যা মামলা। সর্বশেষ ২০১০ সালে সাত বছর জেল খেটে তিনি জামিনে বের হন। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ছিলেন। কয়েক বছর আগেই তিনি এলাকায় ফিরেছেন।
মেজর ইকবাল চাঞ্চল্যকর শ্যামল হত্যা, আমান হত্যা, ভিপি বাবুর ও মুজিব হত্যা মামলার আসামি। থানা পুলিশ বলেন সে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং সক্রিয় ডাকাত দলের সদস্য। রাউজান, ফটিকছড়ি এবং রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকায় সে বিভিন্ন অপকর্মের হোতা এবং ত্রাস সৃষ্টিকারী।
১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও রাউজান কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) মজিবুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসব খুনের ঘটনার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে মেজর ইকবালের নাম। ১৯৯৩ সালে পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেন রাজুকে ব্রাশফায়ারে হত্যার প্রধান আসামিও করা হয় মেজর ইকবালকে। রাউজানে দুই ভাই টিটু ও মিঠুকে একসঙ্গে হত্যা, মুক্তিযোদ্ধা নিহার কান্তি বিশ্বাসকে হত্যা, ছাত্রলীগের জেলা নেতা ইকবাল ও জামিল এবং ফটিকছড়ির শ্যামল ও আমান নামের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন মেজর ইকবাল।
রোববার রাউজানের নোয়াপাড়া এলাকায় জেলা পুলিশের অভিযানে বিপুল দেশী বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহ পাড়া সলিম উল্লাহ ছেলে মো: আব্দুল্লাহ খোকন (লেংড়া খোকন) নোয়াপাড়া কুজি আলীর বাড়ির মো: হারুন ছেলে মো: মারুফ বাগোয়ান ইউনিয়নের পাচখাইন গ্রামের হাজী দলিল উর রহমান ছেলে জিয়াউর রহমান, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পালোয়ান পাড়ার সালেহ ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ীর মোঃ ইকবাল হোসেনের ছেলে মোঃ সাকলাইন হোসেন, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরী হাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির মৃত মোঃ শওকতের ছেলে মোঃ সাকিব, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরী হাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির শহর মুলুকের ছেলে মোহাম্মদ শাহেদ।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এর নির্দেশনায় নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন, পুলিশি টহল, বিশেষ অভিযান এবং রাত্রীকালীন সাঁড়াশি তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।







