লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নগর সেবা ব্যবস্থায় সমন্বয়হীনতার কথা তুলে ধরে তিনি ‘নগর সরকার’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে উদ্যোগ বাস্তবায়নে উদ্যোগের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন মেয়র।
শনিবার সন্ধ্যায় লন্ডনের কিংস্টোনে তারেক রহমানের বাসায় দুই নেতার দীর্ঘ আলাপ হয়। পরে বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সেই সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ করেন মেয়র শাহাদাত। ছবিতে সিটি করপোরেশনে তার এক বছর দায়িত্ব পালন উপলক্ষে প্রকাশিত 'উন্নয়ন প্রতিবেদন' বইটি তারেক রহমানের হাতে তুলে দিতেও দেখা যায় তাকে। বৈঠকে দলীয় ও জাতীয় রাজনীতির বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
রোববার লন্ডন থেকে তিনি জানান, সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমার একবছর পূর্ণ হয়েছে। গত এক বছরে সিটি করপোরেশনের কাজকর্ম আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি। এক বছর উপলক্ষে প্রকাশিত উন্নয়ন প্রতিবেদনের বইটিও তার হাতে তুলে দিয়েছি।
মেয়র বলেন, একবছরে আমরা মোটামুটি সব নালা নর্দমা পরিষ্কার করেছি। যার ফলাফল আমরা এ বছর হাতেনাতে পেয়েছি। এ বছর চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা অর্ধেকে নেমে এসেছে। আরও ২১-২২টা খাল নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনাও তাকে জানিয়েছি। এগুলো খনন করা হলে স্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতামুক্ত হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রামকে গ্রিন, ক্লিন, হেলদি ও সেইফ সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে, সে বিষয়েও পরামর্শ নিয়েছি।
বিভিন্ন সেবা সংস্থার সমন্বয়হীনতাকে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একেক সংস্থা একেকভাবে কাজ করে। কোনো সমন্বয় নেই। এতে শেষ পর্যন্ত নাগরিকরাই ভোগেন। সমন্বয় হবে তখনই, যখন নির্বাচিত ব্যবস্থার মধ্যে আইনগত কর্তৃত্ব দেওয়া হবে। সিটি করপোরেশনের মেয়র জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। সুতরাং সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে নগর সরকার গঠনের কোনো বিকল্প নেই। আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়কে বলেছি, বিএনপি ক্ষমতায় এলে অবশ্যই যেন নগর সরকার গঠনের উদ্যোগ নিয়ে সেটা বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রায় ১৭ বছর পর তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি দেখা হলো মেয়র শাহাদাতের। এর মধ্যে স্কাইপিতে নিয়মিতই কথা হলেও লন্ডনে দেখা হওয়ার সুযোগ হয়নি। তিনি জানান, আগের দুইবার ভিসা আবেদন করেও যেতে পারেননি। এবার কূটনৈতিক পাসপোর্ট থাকায় প্রক্রিয়াটা সহজ হয়েছে।
গত ৮ নভেম্বর ব্যক্তিগত সফরে যুক্তরাজ্যে গেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত। ২১ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা মেয়রের।