স্ত্রী-কন্যার ছবি শেয়ার করে নারীদের ৫ প্রতিশ্রুতি দিলেন তারেক রহমান

স্ত্রী-কন্যার ছবি শেয়ার করে নারীদের ৫ প্রতিশ্রুতি দিলেন তারেক রহমান
এছাড়াও ডিজিটাল দুনিয়া এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের বৈশ্বিক পর্যায়ের সম্পৃক্ততা, সবকিছুতেই ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি লেখেন, প্রযুক্তি যে গতিতে বিশ্বকে এবং বাংলাদেশকে পাল্টে দিয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনি বলেন, কখনো কখনো তিনি এবং তার স্ত্রী ভাবেন, তাদের কন্যার জন্য আজকের পৃথিবী কতটা ভিন্ন, এটি তাদের প্রজন্মের বেড়ে ওঠার সময় ছিল না।

প্রতিটি অভিভাবকের মতো তাদের মনেও একইসঙ্গে আশা ও উদ্বেগ—দুটোই কাজ করে, কারণ সুযোগ যত বেড়েছে, হুমকিও ততই বেড়েছে।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ যদি সামনে এগিয়ে যেতে চায়, তাহলে দেশের মেয়েরা, কন্যাশিশু, তরুণী, মা, বোন, সহকর্মী কেউই যেন ভয়ের মধ্যে আর বাঁচতে না হয়।

প্রতিদিন অসংখ্য নারী হেনস্তা, ভয়ভীতি, বুলিং ও সহিংসতার মুখে পড়ছেন শুধু কথা বলার জন্য, কাজ করার জন্য, পড়াশোনা করার জন্য বা মুক্তভাবে বাঁচার জন্য।

‘এটা আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের মেয়েরা এমন ভবিষ্যৎ পাওয়ার যোগ্য নয়।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, নারীরা অবশ্যই নিরাপদ বোধ করবেন অনলাইনে ও অফলাইনে, ঘরে ও বাইরে, ব্যক্তিগত জীবনে এবং পেশাগত জায়গায়।

নারী নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিএনপি যে পাঁচটি জরুরি অগ্রাধিকার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে, তা তুলে ধরেন তিনি।

প্রথমত, ন্যাশনাল অনলাইন সেফটি সিস্টেম—যেখানে নারীরা সাইবার বুলিং, হুমকি, ছদ্মবেশ বা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ দ্রুত জানাতে পারবেন।

এর জন্য ২৪/৭ হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল ও প্রশিক্ষিত রেসপন্ডার রাখা হবে। বড় প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলা ভাষার কনটেন্ট দ্রুত মডারেশনের ব্যবস্থা করা হবে।

দ্বিতীয়ত, পাবলিক লাইফে নারীর সুরক্ষা প্রোটোকল—সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মী, সমাজকর্মী বা নেতৃত্বশীল নারীরা যদি কোনো হামলা বা হুমকির মুখে পড়েন, তবে জাতীয় নির্দেশিকা, দ্রুত আইনি ও ডিজিটাল সহায়তা এবং গোপনীয় রিপোর্টিং চ্যানেল নিশ্চিত করা হবে।

কোনো নারীকে জনজীবনে অংশ নেওয়ার কারণে নীরব হয়ে থাকতে হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।

তৃতীয়ত, ডিজিটাল সেফটি শিক্ষা—স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশনের সময় থেকেই ডিজিটাল নিরাপত্তার ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

শিক্ষকরা ‘সেফটি ফোকাল পয়েন্ট’ হিসেবে প্রশিক্ষিত হবেন এবং বার্ষিক সচেতনতা ক্যাম্পেইন চালানো হবে, যাতে তরুণরা ডিজিটাল দুনিয়া আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে।

চতুর্থত, কমিউনিটি স্তরে নারীর নিরাপত্তা জোরদার—কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক, নিরাপদ যাতায়াতপথ, উন্নত রাস্তার আলো এবং ট্রমা-সেনসিটিভ রেসপন্ডার নিয়োগের মাধ্যমে নারীদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও নিরাপদ ও সুনিশ্চিত করা হবে।

পঞ্চমত, নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জাতীয় উদ্যোগ—লিডারশিপ ট্রেনিং, মেন্টরিং নেটওয়ার্ক এবং স্কুল-অফিস-কারখানায় শিশু যত্ন সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে নারীরা নেতৃত্ব দিতে, সাফল্য অর্জন করতে এবং পূর্ণাঙ্গভাবে অবদান রাখতে পারবেন। ‘নারী উন্নত হলে, জাতি উন্নত হয়,’ মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, রাজনীতি, ধর্ম, জাতিসত্তা বা লিঙ্গ যাই হোক না কেন, একটি সত্য আমাদের সবাইকে এক করতে হবে: ‘নারী যখন নিরাপদ, সমর্থিত ও ক্ষমতাবান তখন বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য।’

তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের কন্যাদের জন্য, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, এই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email