মেসিকে দেখতে না পেয়ে কলকাতায় গ্যালারিতে ভাঙচুর, দর্শক নেমে পড়লেন মাঠে

মেসিকে দেখতে না পেয়ে কলকাতায় গ্যালারিতে ভাঙচুর, দর্শক নেমে পড়লেন মাঠে

লিওনেল মেসিকে ঘিরে উন্মাদনায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলো কলকাতায়। প্রত্যাশা আর বাস্তবতার ফারাক থেকে ক্ষোভে রূপ নেয় উত্তেজনা, যার জেরে ভাঙচুর ও হট্টগোলে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন।

শুক্রবার মধ্যরাতে ভারতে পৌঁছান আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। কলকাতার হায়াট রিজেন্সিতে অবস্থানকালে সকাল থেকেই তাকে ঘিরে নানা আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই উৎসবমুখর পরিবেশ রূপ নেয় অস্থিরতায়।

মোহনবাগান অল স্টার্স ও ডায়মন্ড হার্বার অল স্টার্সের একটি প্রদর্শনী ম্যাচকে কেন্দ্র করে দুপুরের দিকে যুব ভারতী স্টেডিয়ামে পৌঁছান মেসি। তার সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল। সকালেই তারা বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভার্চুয়ালি মেসির বিশালাকৃতির ভাস্কর্য উন্মোচন করা হয়। তবে সাধারণ দর্শকদের বড় অংশ তখনও কাছ থেকে তাকে দেখার সুযোগ পাননি।

বেলা সাড়ে ১১টার কিছু পর মেসির গাড়ি স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে। গাড়ি থেকে নামার পরপরই তাকে ঘিরে ধরে বিপুলসংখ্যক মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, মূলত আয়োজক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভিড়ের কারণে মেসি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেননি। ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ছবি তোলার হুড়োহুড়িতে নিরাপত্তা বলয় কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে।

গ্যালারিতে বসা দর্শকরা মেসিকে সরাসরি দেখতে না পেয়ে হতাশ হন। বড় পর্দাতেও তার উপস্থিতি স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। সাবেক ফুটবলারদের সঙ্গে পরিচয় পর্বেও একই ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও আয়োজক শতদ্রু দত্ত মাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও তাতে তেমন কাজ হয়নি।

দুপুর ১১টা ৫২ মিনিটে হঠাৎ করেই মেসিকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে নেওয়া হয়। এরপরই ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। অনেক দর্শক অভিযোগ করেন, ১৫ হাজার রুপি পর্যন্ত টিকিট কেটে এসেও তারা মেসিকে এক ঝলক দেখার সুযোগ পাননি।

এরপর শুরু হয় ভাঙচুর। গ্যালারির হোর্ডিং ও চেয়ার ভেঙে মাঠে ছোড়া হয়, পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়। একপর্যায়ে ফেন্সিং ভেঙে দর্শকদের একটি অংশ মাঠে ঢুকে পড়ে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেলেও পরে লাঠিচার্জ করে জনতাকে গ্যালারিতে ফিরিয়ে নেয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অনেক দর্শক এই আয়োজনকে ‘চরম অব্যবস্থাপনা’ ও ‘ভক্তদের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকে।

শুরু থেকেই মেসির সফর ঘিরে প্রশ্ন উঠেছিল আয়োজনের মান নিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে সফরের বাকি দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। সূচি অনুযায়ী, নয়াদিল্লি সফর শেষে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভারত ছাড়ার কথা রয়েছে মেসির।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email