
হাদির মতো এ রকম ঘটনা আরও ঘটতে পারে, আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের হলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘জাতির ক্রান্তি লগ্নে গণতন্ত্র রক্ষায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবারের নির্বাচনটা হবে দুটো শক্তির মধ্যে। একটা শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি। এই শক্তি হচ্ছে উদার গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, এই শক্তি হচ্ছে সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার শক্তি। আর আরেকটি শক্তি হচ্ছে, সেই পেছনে পড়া- যারা আমাদেরকে সবসময় বিভ্রান্ত করতে ধর্মের কথা বলে।
তিনি বলেন, আমরা একাত্তর সালকে ভুলতে পারি না। আমরা যারা দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি, এই দেশের জন্য একটা স্বাধীন ভূখণ্ড এনে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে আমরা এখানে বেঁচে আছি, টিকে আছি এই ভূখণ্ডে। আমরা কি সেই শক্তির দিকে থাকব নাকি, আমরা যারা সেটাকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল তাদের দিকে থাকব?
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমরা মনে করি। সেই সিদ্ধান্ত হচ্ছে নির্বাচনে ধানের শীষের মার্কাকে (প্রতীক) বেছে নেওয়া। এই কারণে এবারের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে যে পোলারাইজেশন সামনে এসেছে অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ কোনটা বেছে নেবে? সে কি স্বাধীনতাকে বেছে নেবে, সার্বভৌমত্বকে বেছে নেবে? গণতন্ত্রকে বেছে নেবে? নাকি সে পিছিয়ে পড়া- যারা অতীতে আমাদের স্বাধীনতাবিরোধীরা যেটা করেছে, আমাদের সমস্ত অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার চেষ্টা করেছে- সেই শক্তিকে বেছে নেবে?
তিনি আরও বলেন, আজকে প্রশ্নগুলো আসছে এই জন্য যে, এই শক্তিটি আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এই শক্তি আজকে আবার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে সেই ধর্মের নামেই। একাত্তর সালেও কিন্তু সেই ধর্মের নামেই বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। অথচ এই শক্তিটি ১৯৪৭ সালে যখন এই দেশের মুসলমানরা তাদের সেলফ ডিটারমিনেশন নিজেদের জেগে ওঠার, নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করবার যে ক্ষমতা, সেটার জন্য যখন লড়াই করেছিল, স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিল তখন এই শক্তি আবার তার বিরোধিতা করেছিল। আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৪৭ সালে এই শক্তিটি সেদিন পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। ওই শক্তি একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে।
ফখরুল বলেন, আজকে সেই শক্তির ভোল পাল্টে, চেহারা পাল্টে তারা কিন্তু এমন ভাব দেখাচ্ছে যে, তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে। সারা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না। যারা আমার জন্মকে অস্বীকার করেছে, যে আমার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে- তাকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে বলে আমি অন্তত মনে করি না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া আদায় করতে চাই যে, আমাদের নেতা তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পরে ইনশাআল্লাহ আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হবেন। এটা আমাদের জন্য অনেক অনুপ্রেরণার বিষয়। আসুন, আমরা ২৫ তারিখে তাকে এমন এক সংবর্ধনা জানাই, যেটা অতীতে কখনো কোনো নেতা বাংলাদেশে পায়নি। আমরা সবাই প্রস্তুত আছি, ইনশাআল্লাহ।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের মিজানুর রহমান, নজরুল ইসলাম, এমএ হালিম, এমএ হাকিম খান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সদস্যসচিব কেএম কামরুজ্জামান নান্নু প্রমুখ বক্তব্য দেন।







