সাকিবকে নিয়ে কড়া অবস্থান ক্রীড়া উপদেষ্টার

সাকিবকে নিয়ে কড়া অবস্থান ক্রীড়া উপদেষ্টার

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। একসময় বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হলেও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আর জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যায়নি তাকে।
আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজনৈতিক পরিচয়ই হয়ে উঠেছে তার ক্যারিয়ারের বড় বাধা।

সম্প্রতি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার এক সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, জাতীয় দলে সাকিবের অধ্যায় হয়তো এখানেই শেষ। এক জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘তাকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেওয়া, এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব না। ইতিপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না। ’

কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সজীব ভুঁইয়া যোগ করেন, “যতবার তিনি (সাকিব) দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন ‘আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। ’ কিন্তু আসল সত্যটা হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম। ”

এই ‘প্রমাণ’ বলতে বোঝান সাকিবের সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্ট। রোববার রাত ৯টার দিকে সাকিব সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা। ’ মুহূর্তেই ভাইরাল হয় পোস্টটি।

এরপরই ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজের ফেসবুকে লেখেন, সাকিবকে ‘পুনর্বাসন’ না করার সিদ্ধান্তই ছিল সঠিক। তিনি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে লিখেন, ‘একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। কিন্তু আমি ঠিক ছিলাম। আলোচনার এখানেই সমাপ্তি। ’

এই পোস্টের জবাবে সাকিব লিখেছেন, ‘যাক, শেষমেষ কেউ একজন স্বীকার করলেন যে তার জন্যই আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলাম না! ফিরবো হয়তো কোনো দিন আপন মাতৃভূমিতে, ভালোবাসি বাংলাদেশ। ’

তবে নিজের পোস্ট নিয়ে সাকিব আবারও ব্যাখ্যা দেন। তার ভাষায়, ‘সে (শেখ হাসিনা) তো সব সময় সিরিয়াসলি খেলা ফলো করেছে, খেলা দেখছে। তাই না? খেলার সঙ্গে যুক্ত এবং ওতপ্রোতভাবেই যুক্ত ছিলেন। তো সেখান থেকেই একটা সম্পর্ক হয়েছে। সেটা রাজনীতির আগে থেকেই। সেই জায়গা থেকে আমি একজনকে উইশ করতেই পারি। তা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য, কাউকে কোনো ইঙ্গিত, এমন কিছুই না। ’

উল্লেখ্য, জাতীয় দলে খেলার সময়ই ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে নাম লেখান সাকিব। যোগ দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ওই বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার থমকে যায়।

অভ্যুত্থানের সময় দেশে ছিলেন না সাকিব। পরে তার নামে একাধিক মামলা হয়। সেই ঝুঁকির কারণে আর দেশে ফেরেননি। বিদায়ী ম্যাচ খেলার অনুমতিও পাননি। সমর্থকরা আন্দোলনে নামলেও সরকার ও বিসিবির সঙ্গে দীর্ঘ টানাপোড়েনে জাতীয় দলে ফেরার পথ বন্ধই থেকে গেছে। বর্তমানে তিনি বিদেশে থেকে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেললেও বাংলাদেশের হয়ে খেলার দরজা কার্যত তার জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email