আনোয়ারা হাসপাতালে সেবার মানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি

আনোয়ারা হাসপাতালে সেবার মানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি

দীর্ঘদিন অনিয়ম ও জনবল সংকটে ভুগে আসা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন বদলে গেছে নতুন রূপে। গত এক বছরে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা, চিকিৎসক উপস্থিতি ও রোগীসেবায় উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে—যা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

এক সময়ের নোংরা, বিশৃঙ্খল এই সরকারি হাসপাতাল এখন পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ফ্রি চিকিৎসা, ঔষধ সরবরাহ এবং বিভিন্ন কর্ণার চালু করায় সরকারি এই হাসপাতালটি সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাসে এখানে ভর্তি ছিলেন ২ হাজার ৮১৪ জন রোগী, জরুরি বিভাগে সেবা নিয়েছেন ১২ হাজারের বেশি, আর বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৩৯ হাজার মানুষ। প্রতিমাসে গড়ে এক্স-রে সেবা গ্রহণ করেন ৪৪ জন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ১৪৪ জন, ল্যাব টেস্ট ১,১৭১ জন এবং ডেন্টাল সেবা নেন প্রায় ৩০০ রোগী।

বর্তমানে হাসপাতালটিতে এনসিডি, এএনসি, আইএমসিআই, শিশু ওয়ার্ড, স্যাম কর্ণার ও ডে কেয়ার সেন্টারসহ বেশ কয়েকটি নতুন ইউনিট চালু করা হয়েছে। এছাড়া সংযোজন করা হয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম ও উন্নতমানের প্যাথলজি মেশিন।

উপজেলায় প্রায় ৩ লাখ স্থায়ী এবং আরও প্রায় ২ লাখ অস্থায়ী বাসিন্দা রয়েছেন। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী, চন্দনাইশ ও কর্ণফুলী উপজেলার মানুষও এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফলে এই একটি হাসপাতালেই প্রায় ১০ লাখ মানুষের চিকিৎসা নির্ভর করছে।

যেখানে দৈনিক ৩০–৩৫ রোগী ভর্তি থাকার কথা, সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৬০–৭০ জন ভর্তি থাকেন বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, বর্তমান ৫০ শয্যার কাঠামো দিয়ে এত বিপুল সংখ্যক রোগীর চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করার আবেদন জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো গেলে আনোয়ারা ও আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা আরও সহজলভ্য হবে। তারা বলেন, যথাযথ মনিটরিং ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে এই হাসপাতাল দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন,
আমি যোগদানের পর হাসপাতালের অনিয়ম দূর করে সেবার মান বাড়াতে কাজ করেছি। এখন রোগীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আস্থা রাখছেন। আমাদের লক্ষ্য—আনোয়ারা হাসপাতালকে আধুনিক ও মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রূপান্তর করা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email