
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে শেখ হাসিনাকে ৫বছর, শেখ রেহানাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে ২ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও জরিমানাও করা হয়েছে তাদের।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এ মামলায় অন্য আসামি হলেন—জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে করা মামলাটির রায় বেলা ১১টার দিকে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘোষণা করবেন।
এ রায় ঘিরে আদালত চত্বরে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকালে থেকে আদালত প্রাঙ্গনে মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। সকালে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশের মুখে বসানো হয় অতিরিক্ত তল্লাশিচৌকি। আদালত চত্বরে বাড়ানো হয় পুলিশি উপস্থিতি। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি র্যাবের টহল টিমও আদালত এলাকায় মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিষ বিন হাছান বলেন, নিয়মিত সদস্যদের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও দুই প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই প্লাটুন বিজিবির সদস্য দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, ‘রায়কে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো শঙ্কা নেই।’
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলার একমাত্র কারাবন্দী আসামি- রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে আদালতে হাজির করা হয়।







