আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিলেন হাসনাত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিলেন হাসনাত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান।

ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এদিন বেরোবির সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেশ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এই মামলায় বর্তমানে ৬ জন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তারা হলেন, এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। এদেরকে আজ সকালে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তবে এ মামলার ৩০ আসামির মধ্যে বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন।

আজকের দিনটি এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ হিসেবে ধার্য ছিল। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ১৮তম দিনের মতো ২১ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়।

পূর্বের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখগুলোতে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন:

২৩ নভেম্বর: এক শিক্ষার্থী জবানবন্দি দেন, যিনি আবু সাঈদকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি জানান, সাঈদকে মৃত ঘোষণার পর পুলিশ পথ থেকে তাঁর মরদেহ কেড়ে নেয়।
১৮ নভেম্বর: শিক্ষার্থী শান-এ রওনক বসুনিয়া বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
১৬ নভেম্বর: মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক ১৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন।
১৩ নভেম্বর: পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
১২ নভেম্বর: এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম সাক্ষ্য দেন এবং জানান যে রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে চালানো গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হয়েছিলেন।
১১ নভেম্বর: কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান আহমেদ জবানবন্দি দেন।
১০ নভেম্বর: জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বেরোবির শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন।
২৮ আগস্ট: জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একই দিনে সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।

চলতি বছরের ২৭ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার পলাতক আসামিদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে এবং ২৮ জুলাই প্রসিকিউশনের অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হয়। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল এবং ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এ মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৬২ জন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email