চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রামে মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবনের দলীয় চত্বরে “মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বীর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ এবং তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জনাব নাজিমুর রহমান এবং প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ডা. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ডা. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভায় আমরা স্মরণ করছি সেই বীর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের, যাদের জাতি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখবে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ভূখণ্ডের স্বাধীনতার লড়াই ছিল না, এটি ছিল একটি জাতির মনন, চিন্তা ও ভবিষ্যৎ রক্ষার সংগ্রাম। বিজয়ের ঠিক আগে হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করেছিল। শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকরা ছিলেন দেশের অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক চেতনার রূপকার। তাদের সৃজনশীলতা, উদার চিন্তাধারা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক ছিল।
একটি জাতির জন্য এমন ক্ষতি কখনো পূরণযোগ্য নয়। আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যে আত্মত্যাগ করেছে, তা আমাদেরকে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্য বুঝতে শিখিয়েছে। আজকের প্রজন্মকে তাদের আদর্শ ও মূল্যবোধ মনে রাখতে হবে, যাতে দেশের অগ্রগতির পথ অবরুদ্ধ না হয়। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করি, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শহীদ পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের আত্মত্যাগকে ব্যর্থ হতে না দেওয়া এবং দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখা।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জনাব নাজিমুর রহমান বলেন,
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময়ে একাত্তরের পরাজিত শক্তি দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিহাস বিকৃতি, সহিংসতা ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। জনগণ যখন ভোটের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে, ঠিক তখনই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ও হামলার মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক জনাব এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলা সেই ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।
আমাদের মনে রাখতে হবে, একাত্তরে দেশের মানুষ যেভাবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে রুখেছিল, আজও একই ধরনের ঐক্য এবং সাহস প্রয়োজন। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে একত্রিত হতে হবে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক অংশগ্রহণই নয়, সামাজিক সচেতনতা, একাত্মতা ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে আমাদের এই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। দেশের মানুষকে এই দায়িত্ব নিতে হবে যাতে স্বাধীনতার বিজয় চিরকাল অটুট থাকে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে গণতন্ত্র হলো জাতির প্রাণ, এবং দেশের অগ্রযাত্রাকে থামাতে যে কেউ চেষ্টা করলেও আমরা একযোগে তার মোকাবিলা করতে সক্ষম।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম.এ. আজিজ, এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দিন, এস.এম. সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, হারুন জামান, শাহ আলম, শওকত আজম খাজা, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আহম্মেদুল আলম চৌধুরী (রাসেল), শিহাব উদ্দিন মুবিন, মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য আবুল হাশেম, কামরুল ইসলাম, হানিফ সওদাগর, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু (চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি), মুজিবুল হক, খোরশেদ আলম, গাজী আইয়ুব, শেখ নুরুন্নাবাহার, জামাল, যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতীদলের সভাপতি সেলিম হাফেজ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুরাদ, মোস্তফা হাকিম কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজুল হক চৌধুরী।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email