
ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের আজ সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা গুচ্ছ গুচ্ছ মিছিল নিয়ে কামাল রঞ্জিত মার্কেটে এসে জমায়েত হতে থাকেন। তারা হামলার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ অথবা জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন।
এ সময় আন্দোলনকারীদের ‘কথায় কথায় হল ছাড়, হল কি তোর বাপ দাদার? আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরে প্রশাসন কি করে?’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
জানতে চাইলে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনে বহিরাগতদের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। হল কারও বাবার সম্পত্তি না যে বলবে আর হল ছেড়ে দেব। জীবন যাবে, তবুও হল ছাড়ব না। আমাদের কণ্ঠরোধ করার জন্যই প্রশাসন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী আহাদ বলেন,‘আমরা যৌক্তিক বিষয়ে আন্দোলন করছি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বহিরাগত এনে আমাদের ওপর হামলা করছে। এ ছাড়া আমাদের কণ্ঠরোধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে টহল দিচ্ছে। তবে আমরা হল ছাড়ব না, যতক্ষণ না আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে। এর আগে আমরা সারারাত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শুয়ে ছিলাম, অথচ তারা এসব দাবিকে তাচ্ছিল্য করছে।’
এ বিষয়ে বায়োইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসিন বলেন, ‘কোন দাবিতে তারা বহিরাগত এনে আমাদের ভাইবোনদের আঘাত করল, তার জবাব দেবে কে? এই ঘটনার জন্য প্রক্টরিয়াল বডিকে পদত্যাগ করতে হবে, না হলে জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে হবে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেট ও এএইচ) ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর গতকাল রবিবার বহিরাগতদের হামলায় অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন। এ ঘটনায় ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
এ ছাড়া গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের আজ সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।