উত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষে শ্রমিক নিহত, আহত অন্তত ১২

উত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষে শ্রমিক নিহত, আহত অন্তত ১২

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুর রহমান। ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানায় কাজ করতেন তিনি।

গত শনিবার থেকে ২৩ দফা দাবিতে এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন।

আন্দোলনরত শ্রমিকদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জেনারেল ম্যানেজারের পদত্যাগ, পুরাতন শ্রমিকদের ছাঁটাই বন্ধ করে পূর্বের লে অফ সিস্টেমে ফেরত আনা, নামাজের সময় নিশ্চিত করা, স্যালারি কার্ড বাতিল করা।

এছাড়া কোনো শ্রমিক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে লে অফ পদ্ধতিতে বের করা, পুরাতন শ্রমিকদের পূর্বের আইডিতে পুনর্বহাল করাসহ ২৩টি দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকরা।

সংঘর্ষের মূল কারণ প্রসঙ্গে জানা যায়, গতকাল রাতে মাইকিং করা হয়েছিল এভারগ্রীন কোম্পানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। অথচ মাসের প্রথম তারিখে যে বেতন দেওয়ার কথা সেই বেতন দেওয়া হয়নি। দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।

সকালে শ্রমিকরা ইপিজেড গেটে প্রবেশ করতে গেলে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। পরে তারা ইপিজেডের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে তাদের সরে যেতে বলে।

এক পর্যায়ে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে লাঠিচার্জ ও গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী।

সাদিকুল ইসলাম নামে একজন শ্রমিক বলেন, “অফিস বন্ধ অথচ তাদের নিজস্ব লোকজন ভেতরে প্রবেশ করছে, আবার বেরও হচ্ছে। শ্রমিকদের সমস্যা হলে আমরা কোথায় বিচার চাইবো?”

“বেপজার (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) কাছে অভিযোগ দিলে কোনো সমাধান পাই না। যে গিয়ে অভিযোগ করে তার চাকরি থাকে না। আমরা যে শ্রম দেই সেটা কি শ্রম নয়? আমরা কি ন্যায্য বিচার পাব না?”- বলেন তিনি।

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তানজিরুল ইসলাম ফারহান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “মৃত অবস্থায় নিহত হাবিবকে হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব নয়।”

এদিকে, নীলফামারী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এম আর সাঈদের সাথে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email