
অদ্য ০৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সিএমএম আদালতে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটসী কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর দায়রা জজ মোঃ হাসানুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইব্রাহিম খলিল, মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এস.এম.আলাউদ্দিন মাহমুদ ও নুসরাত জাহান জিনিয়া।
কনফারেন্সে পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ রইস উদ্দিন, উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধি ডাঃ মোঃ সেলিম উল্লাহ ভুইয়া, বিশেষ পুলিশ সুপার (সিআইডি) ছত্রধর ত্রিপুরা, ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আবদুস ছাত্তার, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ মফিজুল হক ভূইয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, সিনিয়র জেল সুপারের প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, চট্টগ্রাম মহানগরের ১৬টি থানার অফিসার ইনচার্জ, প্রবেশন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সের শুরুতে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান বিগত সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে বিচারাধীন সকল মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জদের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, মেডিকেল সনদ যাতে দ্রুত পাওয়া যায়, সে বিষয়ে মনিটরিং করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যেই তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। আলামত জব্দের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে জব্দতালিকা পূরণ করতে হবে। তিনি সমাপনী বক্তব্যে ফৌজদারী কার্যবিধির নতুন সংশোধনী অনুযায়ী আসামী গ্রেফতারের ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম অব এরেস্ট যথাযথভাবে পূরণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কোন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলে ১২ ঘন্টার মধ্যে তার পরিবার বা তার আত্মীয়-স্বজনকে জানানোর জন্য তিনি নির্দেশ প্রদান করেন।
মহানগর দায়রা জজ মোঃ হাসানুল ইসলাম বলেন, মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে হবে। গায়েবী মামলা থেকে বাঁচার জন্য ফৌজদারী কার্যবিধি সংশোধন করা হয়েছে। তাই কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনে অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত কারণ উল্লেখ করতে হবে। অর্থঋণ আদালতের টাকা জনগণের টাকা। তাই অর্থঋণ আদালতের ওয়ারেন্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামিল করার জন্য তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
কনফারেন্সে আগত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) বলেন, পুলিশ এখন আগের চেয়ে জনবান্ধব। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্বপালনের চেষ্টা করছে, যা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দেখানোর ক্ষেত্রে এখন থেকে আর কোন খামখেয়ালী করা যাবে না।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধি বলেন, ওসিসি একটি স্বতন্ত্র প্রজেক্ট। তার কার্যক্রমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এজন্য বেশ কিছু মামলায় ডিএনএ রিপোর্ট প্রাপ্তিতে বিলম্ব হচ্ছে।
অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা সংশোধনীর মাধ্যমে মূলত: ব্লাস্ট বনাম রাষ্ট্র মামলার বিধানাবলী বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং এই সংশোধনীর ফলে ওয়ারেন্ট ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করতে হলে তাকে অবশ্যই গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের ক্ষেত্রে এখন থেকে আইনজীবীদেরকে শুনানীর সুযোগ দিতে হবে। আসামী গ্রেফতার দেখানোর আবেদনে অবশ্যই পর্যাপ্ত কারণ থাকতে হবে।