শিক্ষার বিকল্প নেই, নৈতিকতার ভিত্তিতেই হতে হবে আদর্শ মানুষ: মেয়র ডা. শাহাদাত 

শিক্ষার বিকল্প নেই, নৈতিকতার ভিত্তিতেই হতে হবে আদর্শ মানুষ: মেয়র ডা. শাহাদাত 

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তবে সেই শিক্ষা তখনই প্রকৃত অর্থে সার্থক হবে, যখন তা আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করবে।”

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জামালখান কুসুম কুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিষ্পেষণ, নির্যাতন ও কুসংস্কারের অন্ধকার যুগে মানবতার আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছিলেন। তিনি জ্ঞান ও নৈতিকতার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের শিক্ষা দিয়েছেন। আল-কোরআনের প্রথম নির্দেশই ছিল—‘পড়’। তাই শিক্ষার্থীদের শুধু বিদ্যাগত জ্ঞান অর্জন নয়, আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য নৈতিক শিক্ষা অর্জনও জরুরি।

তিনি বলেন, আমরা চাই সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষার্থীরা শুধু ভালো ফলাফল করুক তা নয়, তারা যাতে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবেও গড়ে ওঠে। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের নৈতিক শিক্ষা, মানবিকতা আর দেশপ্রেমই আগামী দিনের চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে।

তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে চসিক স্কুলগুলোতে হেলথ প্রোগ্রাম ও পরিবেশ সচেতনতা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে ‘পরিবেশ ক্লাব’ গড়ে তোলা হবে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার, নালা-নর্দমা পরিস্কারসহ নানামুখী জনসচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। কিশোরগ্যাং, মাদকাসক্তি ও ইভটিজিংয়ের মতো সামাজিক ব্যাধি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও স্থানীয় সমাজসেবকদের সমন্বয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

মেয়র আরও বলেন, শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা নয়, নৈতিক শিক্ষার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। যদি একজন ডাক্তার উচ্চ শিক্ষিত হয়েও দরিদ্রদের চিকিৎসা না করতে পারে, তবে সে শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। একইভাবে, যদি একজন শিক্ষক মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সুযোগ না পান, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা সমাজের জন্য তেমন কোনো উপকার বয়ে আনবে না।

শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুস্থ দেহ ও মন গঠনে ক্রীড়া অপরিহার্য। ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের একাগ্রতা, শৃঙ্খলা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে মেয়র বলেন, “আজ যারা জিততে পারোনি, তোমরা নিরাশ না হয়ে আরও মনোযোগী হয়ে আগামী দিনে ভালো করবে।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, সমাজসেবক মনজুর রহমান চৌধুরী, সাবেক প্রধান শিক্ষিকা লিলি বড়ুয়া, সৌমনাথ দাশ রাজু, রতন চৌধুরী, স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্যসহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email