
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যেই প্রার্থীদের বাছাই-প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিএনপিতেও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। আসনভিত্তিক প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। একক প্রার্থী নির্ধারণে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। তবে এবার প্রার্থী নির্বাচনে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে দলটি। ইতোমধ্যে প্রত্যেক আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দায়িত্বশীল নেতারা। সম্ভাব্য প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা, উপজেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও কথা বলছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের প্রথমে অনানুষ্ঠানিকভাবে সবুজ সংকেত জানানো হবে। মাঠপর্যায়ে তারা প্রচার-প্রচারণা চালাবেন। আসনগুলোয় অন্য যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, তারাও সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করবেন। এ সময়ে তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে তফশিল ঘোষণার পর দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডে মাধ্যমে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে।
এই প্রেক্ষাপটে অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি জোরদার করেছে। দলটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩০০ আসনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ করেছে বিএনপি। তবে শরিক দলগুলোর জন্য আসন ছাড়ার পরিকল্পনা থাকায় মিত্রদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আসনের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। কয়েকটি শরিক ইতোমধ্যে নিজেদের তালিকা হাইকমান্ডের কাছে জমা দিয়েছে। এসব তালিকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বয়ং যাচাই করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সব শরিকের সঙ্গে আলোচনা শেষে প্রথমে তাদের জন্য আসন চূড়ান্ত করা হবে, এরপর বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী তালিকা প্রকাশ পাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফেরার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করা হবে। দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিতে তারেক রহমান পাঁচটি মূল মাপকাঠি নির্ধারণ করেছেন।
সেগুলো হলো-
১.ক্লিন ইমেজ: এলাকায় যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল বা দুর্নীতির অভিযোগ নেই, তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
২.জনপ্রিয়তা: বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা যাচাই করা হয়েছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও একমাত্র নির্ধারক হবে না।
৩.ত্যাগ ও আত্মদান: যারা গণতন্ত্রের আন্দোলনে কারাভোগ করেছেন, জীবন দিয়েছেন বা পরিবার-পরিজন গুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন—তাদের অবদান বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে অন্যান্য যোগ্যতাও থাকতে হবে।
৪.সাংগঠনিক অবদান: যারা দীর্ঘদিন সংগঠনকে আগলে রেখেছেন, কর্মীদের পাশে থেকেছেন এবং দলের কর্মসূচিতে সক্রিয় থেকেছেন, তারা প্রাধান্য পাবেন।
৫.কোন্দলমুক্ত: এলাকায় গ্রুপিং বা দলীয় কোন্দলে জড়িত নন, এমন প্রার্থীরাই মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।
জানা গেছে, এই পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতেই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। তবে কিছু আসনে একাধিক সমযোগ্য প্রার্থী থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেই।







