
অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির পঞ্চম দিনে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শহীদ মিনার থেকে শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি পালন করবেন। রোববার (১৯ অক্টোবর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা খালি থালা ও প্লেট হাতে নিয়ে মিছিল করবেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আমরা এই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি। কিন্তু আজও আমরা নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নানা প্রতিশ্রুতি শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল মেলেনি। শিক্ষক হিসেবে আমাদের জীবনে এমন এক অবস্থা এসেছে, যেখানে ‘খালি থালা হাতে’ রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এটা শুধু প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, এটা আমাদের অন্তরের কান্না-বঞ্চনা ও অসম্মানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা।
তিনি আরও বলেন, এসব শুধু শিক্ষকদের দাবি নয়, এটি দেশের শিক্ষার মান রক্ষা ও সমতা প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। সরকার চাইলে আজই এই সংকটের অবসান ঘটাতে পারে। আমরা সরকারের প্রতি বিনীত আবেদন জানাই, আমাদের আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবেন না। শিক্ষক সমাজ মর্যাদা চায়, করুণা নয়। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দাবিতে আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। তাই ক্ষোভ ও প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতেই এই ভুখা মিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত রোববার (১২ অক্টোবর) প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এরপর সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে সারা দেশে পাঠদান বন্ধ রেখে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা।
পরে বুধবার (১৬ অক্টোবর) শাহবাগ মোড়ে তিনঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। সেদিনই ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিরও ঘোষণা আসে।
সরকার এর মধ্যে ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, প্রজ্ঞাপনে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন এখন রাজধানীর বাইরে জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না। তারা বিদ্যালয়ের আঙিনা বা শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এখনো শতাধিক শিক্ষক অবস্থান করছেন। কেউ চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। তারা বলছেন, ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।