
আদালতের নির্দেশে চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর হত্যা মামলা দায়ের করা হলো। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে নায়ক সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হকসহ মোট ১১ জনকে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় এই মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার আদালতের নির্দেশে সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেয়ার পর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই এই মামলা দায়ের করেন সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম।
মামলার এজাহারে প্রথম আসামি হিসেবে নাম রয়েছে সামিরা হকের, এরপর রয়েছেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনসহ আরও কয়েকজন। মোট অভিযুক্ত ১১ জনের পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের নাম।
মামলা প্রসঙ্গে আলমগীর কুমকুম বলেন, ‘সালমান শাহর বাবা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। উনি অনেক চেষ্টা করেছেন অপমৃত্যুকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে। চেষ্টা করতে করতে উনিও দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। এখন এতদিন পর এটা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ এটা প্রমাণ হবে হত্যা না আত্মহত্যা। আপনারা ও দেশবাসী জানবে দেখবে এটা প্রমাণ হবে যে এটা হত্যা।’
এর আগে, অভিনেতা সালমান শাহ হত্যা মামলা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তার মা নীলা চৌধুরীর রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে এই হত্যা মামলা চলবে বলে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ তদন্তযাত্রা, যা প্রায় তিন দশক ধরে অপমৃত্যু মামলা হিসেবেই চলতে থাকে। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দেয়।
তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই ওই প্রতিবেদন মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং দাবি করে আসেন, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ১১ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও কিছু আসামি হতে পারে। আমরা এখানে একটা অপশন রেখেছি, উল্লেখ থাকবে যে, যদি কেউ মারা যায় তাহলে তাকে এ মামলা থেকে বাদ দেয়া হবে।
এদিকে সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর তদন্তে পদে পদে অন্যায় হয়েছে, কেউই দায়িত্বশীল আচরণ করেনি। আদালতের এই মন্তব্যের পরই মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ আসে।
সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘দেন মোহর’ ও ‘তোমাকে চাই’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ এবং ‘বিচার হবে’। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ প্রভৃতি।