
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ একপেশে এবং তা জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। জুলাই মাসের জাতীয় সনদের প্রস্তাবিত সুপারিশ নিয়ে প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাবে বিএনপি।
ফখরুল আরও বলেন, আমরা আশা করি ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের অঙ্গীকার রক্ষায় জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমরা এমন এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে চাই, যেখানে থাকবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতিকে বিভক্ত করার যেকোনো পদক্ষেপ অনৈক্য সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় জীবনে অকল্যাণ ডেকে আনবে। আমরা চাই ঐক্য, প্রতারণা নয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রস্তাবে বলা হয়েছে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একই সঙ্গে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ হিসেবে কাজ করবেন। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা শুধু জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পর্যন্ত সীমিত। সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কোনো এখতিয়ার তাদের নেই। এছাড়া, যদি এই পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ না করে, তাহলে সংস্কার বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে—এমন ধারণা হাস্যকর ও গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থী।
ফখরুল বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন করা হোক। আগে গণভোট নেওয়া অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হলে সময়, ব্যয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে তা যুক্তিযুক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে বহু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। আমরা সবসময়ই গণতান্ত্রিক সংস্কারের পক্ষে। শহীদ জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, খালেদা জিয়ার ভিশন–২০৩০ এবং তারেক রহমানের ২৭ দফা সবই প্রমাণ করে বিএনপি গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্তরিক।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।







