নির্বাচন ও গণভোট আলাদা হলে খরচ বাড়বে তিন হাজার কোটি টাকা

নির্বাচন ও গণভোট আলাদা হলে খরচ বাড়বে তিন হাজার কোটি টাকা

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত গণভোট একসঙ্গে না হলে সরকারের ব্যয় বাড়বে কয়েক হাজার কোটি টাকা—এমন আশঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা।

ইসির হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারের খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। আর গণভোটও আলাদাভাবে আয়োজন করতে হলে একই পরিমাণ অর্থ, জনবল ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা আবারও ব্যয় করতে হবে। এতে শুধু ব্যয়ের চাপই নয়, বাড়বে প্রশাসনিক জটিলতাও।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, গণভোটও নির্বাচনের মতোই প্রস্তুতি দাবি করে—ব্যালট ছাপা, ভোটকেন্দ্র সাজানো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েন, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ—সবই করতে হয় নতুন করে। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে বা পরে আলাদা করে গণভোট আয়োজন মানে সরকারের ওপর দ্বিগুণ চাপ।

অন্যদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, একই ভোটার তালিকা ও একই কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হলে ব্যয় ও সময় দুই-ই বাঁচে। শুধু প্রতিটি ভোটারকে দুটি ব্যালট দিলেই হবে—একটি নির্বাচনের জন্য, অন্যটি গণভোটের জন্য। এতে সরকারের ব্যয় কমবে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা।

ইসি কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “দুটি ভোট একসঙ্গে আয়োজন করলে সরকারের অর্থ ও শ্রম দুই-ই বাঁচবে। আলাদা করলে তা হবে বিশাল অপচয়।”

তবে রাজনৈতিক বিভাজনই এখন বড় বাধা। বিএনপি চায় জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট হোক, কিন্তু জামায়াত চায় নভেম্বরের মধ্যে আলাদাভাবে আয়োজন। রাজনৈতিক এই মতবিরোধে আটকে আছে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচন ও গণভোট আলাদা করে আয়োজন করলে শুধু ব্যয় নয়, প্রশাসনিক চাপও দ্বিগুণ হবে—যার ভার শেষ পর্যন্ত পড়বে জনগণের ঘাড়েই।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email