
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) আনুষ্ঠানিকভাবে ৫০তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
বুধবার কমিশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) মাসুমা আফরীনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর নতুন বিসিএসের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আগ্রহী চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে, যা চলবে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন ও ফি জমা দিতে না পারলে আর সুযোগ থাকবে না বলেও পিএসসি স্পষ্ট করেছে।
প্রার্থীদের পিএসসির নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। তথ্যভিত্তিক আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রের তথ্য সঠিকভাবে যুক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। ভুল তথ্য বা অসম্পূর্ণ আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর প্রার্থীদের নির্ধারিত ফি টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। ফি জমা না দিলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবেদন জমা ও ফি পরিশোধ–দুটি ধাপ সম্পন্ন হলেই আবেদন বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
৫০তম বিসিএসকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে আলোচনা ছিল, বিশেষত এবার পদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট পদসংখ্যা উল্লেখ করা না হলেও কমিশন জানিয়েছে, শিগগিরই বিস্তারিত পদঘোষণা প্রকাশ করা হবে। জনপ্রশাসন ও স্বাস্থ্য খাতে তুলনামূলক বেশি পদ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হলেও পিএসসি আনুষ্ঠানিক সংখ্যা এখনো জানাননি।
স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস
প্রার্থীদের সুবিধার্থে আবেদন নির্দেশিকা সহজ ভাষায় সাজানো হয়েছে। পরীক্ষার ধাপ, যোগ্যতা, বয়সসীমা, শারীরিক যোগ্যতা, কোটা পদ্ধতি এবং পরীক্ষাকেন্দ্র সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী ৫০তম বিসিএসে প্রার্থী বাছাই তিনটি ধাপে হবে
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা– বহু নির্বাচনী (MCQ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
লিখিত পরীক্ষা– ক্যাডারভেদে নির্ধারিত বিষয় ও নম্বর কাঠামো অনুযায়ী হবে।
মৌখিক পরীক্ষা– লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে।
পিএসসি বলেছে, পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও ন্যায়সংগত পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। পরীক্ষার সময়সূচি ও কেন্দ্রসমূহ পরে জানানো হবে।
ন্যূনতম স্নাতক বা সমমান পাস করেছেন এমন প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
বয়সসীমা সাধারণত ২১ থেকে ৩০ বছর, তবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সন্তান, বিশেষ কোটা প্রাপ্ত এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর।
বিদেশি ডিগ্রিধারী হলে সমমান নির্ধারণের সনদ যুক্ত করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন বিসিএস প্রস্তুতি গ্রুপে ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। চাকরি প্রত্যাশীরা বলছেন, দীর্ঘ বিরতির পর নতুন বিসিএসের ঘোষণা তাদের প্রস্তুতিকে আরও গতিশীল করবে।
এক বিসিএস প্রার্থী জানান, ৫০তম বিসিএসের অপেক্ষায় ছিলাম অনেক দিন। এখন লক্ষ্য আরও স্পষ্ট, প্রস্তুতিতেও গতি আসবে।
কমিশন সতর্ক করে বলেছে, ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল এবং পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
সময়সীমার শেষ মুহূর্তে আবেদন না করে যত দ্রুত সম্ভব আবেদন সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে, যাতে সার্ভারজনিত কোনো চাপ তৈরি হলে সমস্যা না হয়।
নতুন বিসিএস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকারি উচ্চপদে যোগদানের আরেকটি সুযোগ উন্মুক্ত হলো তরুণদের জন্য। দেশজুড়ে বিসিএস প্রত্যাশীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হলেও পিএসসি পরিষ্কার জানিয়েছে স্বচ্ছতা, নিয়ম মেনে এবং নির্ধারিত সময়ে আবেদনের মাধ্যমেই ৫০তম বিসিএসের সব প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে।







