
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের নেত্রী। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং দেশের সংকটময় মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাঁর রাজনৈতিক দর্শন। ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের সময় তাঁকে দেশত্যাগের প্রস্তাব দেয়া হলেও তিনি জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রাম থেকে সরে আসেননি। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘীর জনসভায় তিনি বিএনপির জন্য ভোট না চেয়ে “দেশ বাচাও, মানুষ বাচাও” শ্লোগান দিয়েছিলেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে বছরের পর বছর কারাবন্দি রাখা হয়েছে। তাঁর ওপর জেলখানায় নির্যাতন চালানো হয়েছে, এমনকি জেলখানায় বেগম খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। গণতন্ত্র রক্ষায় তার সংগ্রামী মনোভাবের জন্যই তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
তিনি শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বাদে মাগরিব নগরীর আমানত শাহ (রঃ) মাজার সংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত হোসেনের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা তবারক আলী। পরে তিনি মাজার সংলগ্ন তনজিমুল মোছলিমীন এতিম খানায় এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন।
এসময় তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে এভার কেয়ার হাসপাতালে দেখে আসার কথা জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনামলে খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন হয়েছে। তার চিকিৎসক টিমের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, কারাগারে থাকার কারণেই তার কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তারপরও তিনি দেশের মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। এজন্যই তিনি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতীক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিশোধের সংস্কৃতি তীব্র। কিন্তু খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি চালাননি। ২০০১ সালেও জামিন বাতিল, মামলা হয়রানি এসব তিনি করেননি। একজন নেতা হিসেবে সংযমকে তিনি শক্তিতে রূপ দিয়েছেন। রাজনৈতিক শত্রুর প্রতি প্রতিশোধ না নেওয়াটা ছিল তাঁর নরম শক্তি যা আজ রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল ত্যাগ। এই দেশটাতে কেউ যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, আর সবকিছু হারিয়েও শেকড় আঁকড়ে থেকেছে, তিনি হলেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের এক এগারোর সময় যখন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তখন খালেদা জিয়া স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘চিকিৎসা নিতে হলে দেশে নেব, মরতে হলে এখানেই মরব, বাংলাদেশের মানুষকে ফেলে বিদেশে যাব না।’ তার আপোষহীন অবস্থানের কারণেই বিদেশি মহল চাপ সৃষ্টি করেও ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। গত ১৬ বছর এত নির্যাতনের পরও খালেদা জিয়া দেশ ছাড়েননি কিন্তু স্বৈরশাসক হাসিনা ঠিকই পালিয়েছে। এখনও যারা দেশের গণতন্ত্রের পথে বিভিন্ন বাধা তৈরী করছে তারাও পালাবে।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও চট্টগ্রাম ৯ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, কাজী বেলাল উদ্দিন, হারুন জামান, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, আর ইউ চৌধুরী শাহিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, ইসকান্দর মির্জা, মো. মহসিন, মো. খোরশেদুল আলম, গাজী সিরাজ উল্লাহ, মো. কামরুল ইসলাম, সৈয়দ শিহাব উদ্দীন আলম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, মোহাম্মদ আজম, মো. ইসমাইল বালি, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, শাহজাদা এনায়েত উল্লাহ খান, থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া সহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ।







