শততম টেস্টে ৯৯ রানে অপরাজিত মুশফিক

শততম টেস্টে ৯৯ রানে অপরাজিত মুশফিক

বিপদে দলকে উদ্ধার করাকে যিনি দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছেন বার বার, সেই মুশফিকুর রহিমের ব্যাট হাসল আরও একবার। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নেমে ৯৯ রানে অপরাজিত আছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে চাপ সরিয়ে বাংলাদেশও রয়েছে শক্ত অবস্থানে।

৪ উইকেটে ২৯২ রান তুলে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। অবিচ্ছিন্ন ৯০ রানের জুটিতে মুশফিকের সঙ্গী হিসেবে উইকেটে আছেন লিটন কুমার দাস।

ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে মুশফিক। ১৮৭ বলে ৯৯ রানের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৫ চারে।

আর লিটন অপরাজিত আছেন ৪৭ রানে। ৮৬ বলে ২ চারে গড়া ইনিংসের পথে তিনি পেরিয়েছেন টেস্টে তিন হাজার রানের মাইলফলক।

প্রথম সেশনে তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপ নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ফিরে এসে সেই চাপ সরিয়ে দলকে টানেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক ও মুমিনুল হক।

চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৯২। দ্বিতীয় সেশনে ৩১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে আসে ৯২ রান। পরে মুমিনুলের বিদায়ে ভাঙে ২১৪ বল স্থায়ী ১০৭ রানের জুটি।

মুমিনুল ১২৮ বলে ১ চারে ৬৩ রানে ফিরেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ২০২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এই ম্যাকব্রিনই সবচেয়ে বেশি ভূগিয়েছে বাংলাদেশকে। দিনের চার উইকেটই নেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার।

মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার টস জিতে ব্যাট বেছে নেওয়া বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য মন্দ ছিল না। ভালো শুরু পেয়েও থিতু হয়ে আউট হন দুই ওপেনার। তাদের সঙ্গে দ্রুত ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও।

৪৪ বলে ৬ চারে ৩৫ রান করে প্রথমে আউট হন সাদমান ইসলাম। দলীয় রান তখন ৫২। মাহমুদুল হাসান জয় ৮৬ বলে ২ চারে ৩৪ রান করে হন এলবিডব্লিউয়ের শিকার। একটি ঝক্কা মেরে বোল্ড হয়ে যান শান্ত (১১ বলে ৮)।

সিলেটে ইনিংস ও ৪৭ রানে জেতা একাদশ থেকে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। বাদ পড়েন দুই পেসার নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ। তাদের জায়গায় আসেন ইবাদত হোসেন ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

গত জুনে দেশের হয়ে সবশেষ টেস্ট খেলেন গতিময় পেসার ইবাদত। আরেক পেসার খালেদ সবশেষ টেস্ট খেলেন গত এপ্রিলে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

আয়ারল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয়েছে স্টিভেন ডোহেনি ও গ্যাভিন হোয়ের। বাদ পড়েছেন ব্যারি ম্যাককার্থি ও ক্রেইগ ইয়াং।

২০০৫ সালে অভিষেকে মুশফিকুর রহিমকে টেস্ট টুপি দিয়েছিলেন সেই সময়ের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার, তিনিই শততম টেস্ট উপলক্ষ্যে এক সময়ের সতীর্থকে পরিয়ে দেন বিশেষ টুপি। পরে মুশফিকের হাতে ক্যাপ ক্যাসকেট দেন দেশের এক নম্বর টেস্ট ক্যাপধারী আকরাম খান।

এসময় মাঠে উপস্থিত ছিলেন মুশফিকের পরিবারের সদস্যরা। লর্ডসের সেই ম্যাচের একাদশে থাকা ক্রিকেটারদের কয়েকজনও ছিলেন সংক্ষিপ্ত আয়োজনে। ছিলেন আইরিশ ক্রিকেটাররাও।

মুশফিককে বিশেষ ক্রেস্ট উপহার দেন দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান এবং বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম। পরে মুশফিকের প্রথম অধিনায়ক হাবিবুল বাশার এবং বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে তুলে দেন বিশেষ টেস্ট জার্সি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯২/৪ (জয় ৩৪, সাদমান ৩৫, মুমিনুল ৬৩, শান্ত ৮, মুশফিক ৯৯*, লিটন ৪৭*; নিল ৮-০-৩৭-০, ক‍্যাম্ফার ৮-০-২৮-০, ম‍্যাকব্রাইন ২৬-২-৮২-৪, হামফ্রিজ ২৬-০-৮৩-০, হোয়ে ১৯-১-৪৮-০, টেক্টর ৩-০-১০-০)

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email