এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রার্থী বদল করেছে বিএনপি। আসনটিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদের পরিবর্তে সাইদ আল নোমানকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি।
অপরদিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে এ আসন থেকে সরিয়ে চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাইদ আল নোমন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পাট শ্রমিক দলের সভাপতি।চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অন্যতম আলোচনায় ছিলেন তিনি। সাইদ আল নোমন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে।
পিতা আবদুল্লাহ আল নোমানের রাজনৈতিক দর্শন ছিল সাধারণের জন্য রাজনীতি। চট্টগ্রামে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম নোমান। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনীতির নেতৃত্বও ছিল তার হাতে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার প্রায় সব জায়গায় ছিল তার নেতৃত্ব। এসব এলাকায় তার অনুসারীরাই নেতৃত্বের আসনে থাকতেন সব সময়। তাকে ছাড়া চট্টগ্রামে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিও একসময় যেন ছিল অকল্পনীয়।
ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে নোমান যোগ দেন ছাত্র ইউনিয়নে। মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ছাত্রজীবন শেষ করে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালে তাকে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে আবারও ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর ১৯৮১ সালে যোগ দেন দলটিতে।
আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামের কোতোয়ালি আসন থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির হয়ে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি) ও ২০০১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে তাকে সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর বিভিন্ন মেয়াদে তিনি খাদ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক–এগারোর সময় বিদেশে ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। ফিরে আসার পর দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন; সঙ্গে যোগ হয় শারীরিক অসুস্থতা। সরকারবিরোধী আন্দোলনের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশে দেখা যায়নি তাকে। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে বিএনপির বড় কোনো কর্মসূচিতে তার অনুপস্থিতি তখন নেতা-কর্মী ও বিএনপির সমর্থকদের হতাশ করে।
নোমানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা জানান, সরকার পতনের আন্দোলনের কর্মসূচিতে অসুস্থ শরীর নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন নোমান। তবে নানা কারণে তার অভিমানও ছিল। তার হাত ধরে রাজনীতিতে আসা অনেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ শীর্ষ পদে অবস্থান করলেও সেভাবে নোমানের মূল্যায়ন হয়নি দলে।







