
পিছিয়ে গেল চাকসু নির্বাচন । ১২ অক্টোবর এর পরিবর্তে ১৫ অক্টোবর ভোটের দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ তিন যুগ পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে (চাকসু) নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এবারে সংগঠনটির প্যানেল সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোঃ শাফায়াত হোসেন।
ক্যাম্পাসের বহুল পরিচিত মুখ মোঃ শাফায়াত হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সাইন্সের একজন শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দলের একজন নামকরা ফুটবলার। একই সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত তরুণ এই ছাত্রনেতাকে প্রতিনিয়ত এখন দেখা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পথে প্রান্তরে, শুনছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা এবং তা সমাধানে নিজেকে নিয়োজিত করার সুযোগ চাচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে। আসন্ন চাকসু নির্বাচনে তিনি শিক্ষার্থীদের হয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন।
কলেজ জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শাফায়াত হোসেন জানান, আমার ছাত্র রাজনীতির যাত্রা কলেজ জীবন থেকেই শুরু। সেই সময় থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ন্যায়, অধিকার ও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে আসছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি একটি আধুনিক, শিক্ষার্থী-বান্ধব ও গবেষণামুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শিক্ষার্থীরা যেন কেবল ক্লাসরুমে নয়, গবেষণা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেদের পূর্ণ বিকাশ করতে পারে।
শাফায়াত হোসেন মনে করেন, দেশের অন্যতম স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গন দীর্ঘদিন ধরেই স্থবির হয়ে আছে। তিনি বলেন, সংস্কৃতি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গন অনেকটাই অবহেলিত ছিল। আমরা চাই, সকল সাংস্কৃতিক ক্লাব ও সংগঠনকে যথাযথ সুযোগ, স্থায়ী বাজেট এবং মঞ্চ প্রদান করা হোক। নাটক, সংগীত, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, বিতর্ক—সবকিছু নিয়মিতভাবে পরিচালিত হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশের জন্য আমরা একটি সৃজনশীল ও উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ নিশ্চিত করব, যাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠতে পারে দেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে।
শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, প্রথমেই আমরা শিক্ষার্থীদের মূল সমস্যাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিহ্নিত করব। এরপর প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা ও চাপ সৃষ্টি করে দ্রুত এবং কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করব। চাকসু হবে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের সেতু, যেখানে শিক্ষার্থীদের দাবি, দাবি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়—সবই একসাথে চলবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগ করছেন—আবাসন সংকট, দুর্বল শাটল ও বাস সেবা, নিরাপত্তাহীনতা, মানসম্মত খাবারের অভাব এবং চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতি। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলার সুযোগও সীমিত। এই সমস্যাগুলো সমাধান না হলে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশ করতে পারবে না। তাই এগুলো আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক সমাধান তালিকার শীর্ষে থাকবে।
এছাড়াও আবাসন সংকট নিরসনে হল সংখ্যা বৃদ্ধি, যাতায়াত সমস্যার সমাধানে শাটলের বগি ও সিডিউল বৃদ্ধি এবং শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে শহরাঞ্চলে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।