প্রস্তাবিত‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা নিয়ে উত্তাপ, আসছে অবরোধ-ঘেরাও কর্মসূচি

প্রস্তাবিত‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা নিয়ে উত্তাপ, আসছে অবরোধ-ঘেরাও কর্মসূচি

চট্টগ্রামের প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলার সঙ্গে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করার প্রস্তাবের প্রতিবাদ অবরোধ-ঘেরাও ও গণঅনশনের এর মত কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা্। আগামী সাত দিনের মধ্যে উল্লেখিত এলাকাগুলো প্রস্তাবিত উপজেলা বাদ না দিলে তারা এসব কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

শনিবার দুপুরে নগরের একটি কনফারেন্স হলে এই হুঁশিয়ারী দিয়েছে ’বৃহত্তর সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা বক্তারা বলেন, সরকারের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে ’ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা গঠনের প্রস্তাব করা হয়েচে। আমরা সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তবে এতে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করার প্রস্তাব আইনি জটিলতা তৈরী করবে। এ নিয়ে বৃহত্তর সুয়াবিলের জনগণ উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে। প্রশাসনিক বিভাজনে জনগণের মতামতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও হালদা নদী গবেষক প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।

তিনি বলেন, ‘সুয়াবিল ইউনিয়ন ফটিকছড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী অংশ। ফটিকছড়ি সদরের সঙ্গে সুয়াবিল ইউনিয়নের দূরত্ব যেখানে মাত্র ৫ কিলোমিটার, সেখানে প্রস্তাবিত নতুন উপজেলার কেন্দ্র থেকে দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এ অবস্থায় উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে সুয়াবিলের জনগণকে প্রশাসনিক ও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে।’

চবির এই প্রফেসর অভিযোগ করেন, ‘মাঠ প্রশাসনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে কিংবা জেলা প্রশাসকের প্রেরিত সুপারিশে সুয়াবিল ইউনিয়ন বা নাজিরহাট পৌরসভার কোনো অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভৌগলিক তথ্য বিকৃত করে নাম সংযোজন করা হয়েছে।’

‘এর প্রতিবাদে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দিয়েছে এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সাথেও সাক্ষাৎ করেছে। আগামি সাত দিনের মধ্যে যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ, ঘেরাও ও গণঅনশনের এর মত কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে,’ তিনি হুঁশিয়ার করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পরিচালক রকিবুল আলম চৌধুরী প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলার সদর দপ্তর যৌক্তিক স্থানে স্থাপনের দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘ফটিকছড়ির আয়তন ফেনী জেলা থেকেও বড়। এখানে তিনটি উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি বহু আগের। সরকার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু ইউনিয়ন নিয়ে ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা নামে আলাদা উপজেলা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা অত্যন্ত আনন্দের। তবে অবশ্যই সেই উপজেলার সদর দপ্তর হতে হবে যৌক্তিক হিসাবে নারায়ণহাটের আশেপাশে।’

‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আবারও ভুজপুরে উপজেলা নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করা হচ্ছে,’ তিনি অভিযোগ করেন।

উত্তর ফটিকছড়ি নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক ও Head of Support Functions & HSE – BSRM osman gani mazumder বলেন, ‘ফটিকছড়িকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। উল্লেখিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ফটিকছড়িতে আগুন জ্বলবে। উত্তর ফটিকছড়ির আয়তন পুরো উপজেলার অর্ধেক। পৌণে দুই লাখ ভোটারের ভাগ্য নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলা হলে ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রাম-খাগরাছড়ি যোগাযোগ অচল হয়ে যেতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এডভোকেট ইসমাইল গনি, সুয়াবিল ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস. এম. সফিউল আলম, ডা. এস এম ফরিদ, সুয়াবিল ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন ও মো. হামিদুর রহমান, সুয়াবিলের বাসিন্দা এস এম নঈম উদ্দিন, মো. রাসেল, গাজী আমান উল্লাহ, মো. শাহজাহান, মাহবুবুল আলম, আমান উল্লাহ ও ফয়জুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on whatsapp
Share on email