
ইসকন ইন্ডিয়ার এজেন্ট হিসেবে বাংলাদেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতায় লিপ্ত বলে অভিযোগ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
টঙ্গীতে মসজিদের ইমাম মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে (৬০) গুম করার প্রতিবাদ জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান বিবৃতিতে বলেন, এদেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ইসকন ইন্ডিয়ার এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতায় লিপ্ত। সবশেষ, টঙ্গী বিটিসিএল টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে জুমার খুতবায় সত্যোচ্চারণের কারণে পরপর ১২টি চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দেওয়ার এক পর্যায়ে ইসকনি সন্ত্রাসীরা তাকে গাজীপুর থেকে গুম করে। অবশেষে ওই ইমামকে সীমান্তবর্তী পঞ্চগড়ে শিকলে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেছে। আমরা এই গুমের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ‘বৃথা’ দাবি জানাচ্ছি। এদেশের মুসলমানরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত কোনো অপরাধীর জুলুমের শিকার হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিবৃতি আসে না। বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার মুসলমানদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষার প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকার বারবার নীরব থেকেছে।
তারা আরও বলেন, গত বছরের নভেম্বরে অর্থপাচারের অভিযোগে ইন্ডিয়ান এজেন্ট চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ (টাইমস অব ইন্ডিয়া)। ২০২১ সালের জুনে চট্টগ্রামে অবস্থিত প্রবর্তক সংঘ নামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি সংগঠন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইসকনের বিরুদ্ধে জমি দখলসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ তোলে। মন্দিরের নাম দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তারা ইসরাইলি কায়দায় একের পর এক আস্তানা ও স্থাপনা গড়ে তুলেছে। দুর্বল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপরও তারা নির্যাতন চালাতে দ্বিধা করে না। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের হাইকমিশনের প্রভাব খাটিয়ে ইসকন এ দেশের প্রশাসন, আমলা ও গোয়েন্দা বাহিনীর একটি অংশকে ম্যানেজ করে তাদের উগ্র হিন্দুত্ববাদী তৎপরতা জারি রাখতে পেরেছে।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নকারী ও মুসলিমবিদ্বেষী ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গত বছরের নভেম্বরে গ্রেফতার হলে তার অনুসারী ইসকনি সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংস হামলা চালিয়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে শহীদ করে। সেসময় চট্টগ্রামের মুসলমানদের অভাবিত ধৈর্য ও বিচক্ষণতা প্রদর্শনকে ‘দুর্বলতা’ হিসেবে নিয়েছে ইসকন। তা নাহলে কীভাবে তারা আজ ভিন্নমতের কারণে একজন ইমামকে গুম করার স্পর্ধা দেখায়?
তারা আরও বলেন, গত বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর ইন্ডিয়ার মদদে ইসকন নেতা চিন্ময় দাস দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের বিভিন্ন অপচেষ্টা করেছিল। এদেশের মুসলমানদের ধৈর্য ও বিচক্ষণতার কারণে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে পারেনি। সম্প্রতি একের পর এক মুসলিম মেয়েকে ধর্ষণ করে দেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে সক্রিয় ইন্ডিয়ান এজেন্টরা।
তারা বলেন, ইসকন মুসলমান ও সনাতনী সম্প্রদায় উভয়ের শত্রু। সম্প্রীতি রক্ষার্থে মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আমরা সারা দেশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ইসকনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।