
বলিউডের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অন্যতম কৃতি শ্যানন। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ রোমান্টিক ছবিতে দেখা গেছে তাকে। তবে সেই বৃত্ত ভেঙে রোমান্টিক খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী।
যখনই সুযোগ পেয়েছেন ভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এই অভিনেত্রীর কথায়, এমন অনেক চরিত্র আছে, যা পর্দায় তুলে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে আছি। অপেক্ষায় আছি, পর্দায় সুপার হিরো হয়ে ওঠার। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই ইচ্ছা প্রকাশের পাশাপাশি কৃতি এও বলেছেন, ‘বলিউডে ‘কৃষ’ ছাড়া মনে রাখার মতো সুপার হিরো সিনেমা আর তৈরি হয়নি বললেই চলে। এ রকম আরও কিছু সিনেমা নির্মিত হলে বিষয়টা মন্দ হয় না। সে ক্ষেত্রে আমার জন্য হয়তো সুযোগ তৈরি হবে সুপার উইম্যান হয়ে ওঠার।’
সুপার হিরো সিনেমার প্রতি নিজের দুর্বলতার কথা এভাবেই অকপটে স্বীকার করেছেন কৃতি। কিন্তু কবে স্বপ্নের সেই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাবেন, তা শুধু সময়ই বলে দেবে। আপাতত অভিনয়ে নিজেকে ভাঙতে ব্যতিক্রমী বেশ কিছু চরিত্র বেছে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে তিনি আলোচনায় আছেন তার ‘তেরে ইশক মে’ সিনেমা নিয়ে।
ধানুশের বিপরীতে ‘তেরে ইশক মে’ ছবিতে বলিউড অভিনেত্রী কৃতি শ্যাননের উপস্থিতি মুহূর্তেই জয় করেছে দক্ষিণী সিনেপ্রেমীদের হৃদয় । মুক্তির আগ পর্যন্ত বলিউড থেকে দক্ষিণী বিনোদন অঙ্গনের সবার মনে একটাই প্রশ্ন, অ্যাকশনধর্মী এই চরিত্রে কৃতি নিজেকে আদৌ খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন কি না।
জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘সেলফ রিলায়েন্ট অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪’
কিন্তু পর্দায় তার প্রথম প্রবেশেই বদলে যায় সমীকরণ, চোখের তীক্ষ্ণ দৃঢ়তা, নিখুঁত স্টান্ট আর আবেগের বিস্ফোরণে তিনি যেন ভেঙে দেন সব সংশয়ের দেয়াল। সমালোচকেরা স্তব্ধ, দর্শকেরা মুগ্ধ, এ যেন কৃতির অভিনয়জীবনের নতুন এক উত্থানের ঘোষণা।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণী দর্শকেরা এই ছবি দেখার পর থেকেই দাবি করেছেন, ‘নেপোকিডদের স্বজনপ্রীতির কারণে অনেক ভালো অভিনেত্রী ভালো ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পান না। গুঞ্জন, বলিউড এবং দক্ষিণী বিনোদনদুনিয়ায় এই ছবি ঘিরে নাকি কম চর্চা হয়নি। ছবি মুক্তির আগে, অনেকেই নাকি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন- আদ্যন্ত অ্যাকশনধর্মী ছবিতে কৃতি নিজেকে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন।
তবে ছবি দেখে সকলেরই সেই দ্বিধা কেটেছে। প্রত্যেকে একবাক্যে স্বীকার করেছেন, ‘লেডি কবীর সিংহ’ চরিত্রে কৃতি নিখুঁত। এমনও বলতে শোনা যায়, এই ছবিতে অভিনয় করে কৃতি প্রমাণ করেছেন, তিনি আলিয়া ভাটের থেকেও ভালো অভিনেত্রী। সঠিক সুযোগ পান না বলেই নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন না।
এদিকে দর্শকের ভালোবাসায় আবেগে আপ্লুত হয়েছেন নায়িকা নিজেও। ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেল ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘নিজেকে ছড়িয়ে না দিলে, নতুন ঝুঁকি না নিলে নিজেকে প্রমাণ করা যায় না। এই ছবিতে সে সবই করার চেষ্টা করেছি। দর্শককে ধন্যবাদ। তাদের আমার কাজ ভালো লেগেছে।’ তবে দর্শকের তোলা ‘স্বজনপ্রীতির’ অভিযোগ তিনি সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন।
আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় নির্মিত এ সিনেমায় ধানুশ-কৃতির পাশাপাশি অভিনয় করেছেন, প্রকাশ রাজ, মাহির মহিউদ্দিন, সুশীল দাহিয়াসহ আরও অনেকে।
কৃতি শ্যাননের জন্ম ১৯৯০ সালের ২৭ জুলাই ভারতের দিল্লিতে। মডেলিংয়ের মাধ্যমে মিডিয়াতে আগমন করার পরে তিনি সুকুমারের তেলেগু চলচ্চিত্র-১ নেনোক্কাদিন-এ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। তার প্রথম বলিউড চলচ্চিত্র ছিল সাব্বির খানের রোমান্টিক অ্যাকশনধর্মী ছবি ‘হিরোপান্টি’।
এই চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের সুবাদে তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেত্রী লাভ করেন। কৃতি শ্যাননের উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে হলো- ‘নেনোক্কাদিন, হিরোপন্তি’ দোসাই, দিলওয়ালে, রাবতা, বরেলি কি বরফি, স্ত্রী, লুকা ছুপি, কলঙ্ক, অর্জুন পাতিওয়ালা, হাউসফুল ৪, পানিপথ, পতি পত্নী, মিমি ইত্যাদি।







