
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি তরুণকে চাকরির ব্যবস্থা করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
তিনি বলেন,যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করে, গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চায়, দেশে অস্থিরতা তৈরি করে, এ ধরনের গণতন্ত্র বিরোধীদের ‘রাজনৈতিক দল’ বলা যায় না। তাদের ভূমিকা রাজনৈতিক দল নয়, বরং প্রেসার গ্রুপের মতো। বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার (৫ নভেন্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব জুলাই বিপ্লব হলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আয়োজিত আমার প্রথম ভোট ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ আবু হুরাইরা সভাপতিত্বে এম.রাজিবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দুর পরিচালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও হাটহাজারী সংসদীয় আসনের বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন,রাঙ্গুনিয়া থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হুম্মাম কাদের চৌধুরী,বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু,প্রফেসর নসরুল কাদের ,ব্যারিষ্টার ফয়সাল দস্তগীর।
উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম,সদস্য সচিব তুহিন,আল সাদ্দাম।
আমির খসরু আরো বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে ধৈর্যের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার ছয় মাসের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আনতে না পারলে অস্থিরতা শুরু হবে।’ সেই ভাবনা থেকেই বিএনপি প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতি নিয়ে সার্বিক পরিকল্পনা সম্পন্ন করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারলে এই কাজ শুরু করতে দেরি হবে না।
আমির খসরু বলেছেন, বাংলাদেশের এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) থেকে উত্তরণের আগে অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল না হলে গ্রাজুয়েশন সুফল আংশিকই হবে।
আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়, গণতন্ত্রকে যারা ধ্বংস করতে চায়, অস্থিরতা সৃষ্টি করে দেশকে অশান্ত রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়—তাদের তো রাজনৈতিক দল বলা কঠিন। আপনি যদি রাজনৈতিক দল হয়েও নির্বাচনে যাবেন না, নির্বাচন যেতে চাইবেন না, নির্বাচন করতে দেবেন না, নির্বাচনে যেতে দিবেন না; তাহলে তো আপনি প্রেসার গ্রুপের কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রেসার গ্রুপেরও একটা দায়িত্ব আছে। আপনি প্রেসার গ্রুপের কাজ করেন। কিন্তু যারা রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতি করতে দিন। এ প্রক্রিয়া তো এখন শেখ হাসিনার কথার মতো হয়ে গেছে—ইলেকশন মানেই আমি। আর এখন দেখা যাচ্ছে, তারা নিজেরাই বলছে, নির্বাচনেরই দরকার নেই।
তিনি বলেন, বসার জন্য জরুরি হচ্ছে “ফিল গুড ফ্যাক্টর”। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে, ব্যবসার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ও সহজ পরিবেশ তৈরি করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যদি স্থিতিশীলতা ও সুযোগ-সুবিধা না দেখেন, তারা আগ্রহী হবেন না। অর্থনীতিতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ও দুর্নীতি বেড়ে যায়, যা দেশের ব্যবসার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ওভাররেগুলেটেড কান্ট্রি, যেখানে ব্যবসায়ীদের অসুবিধা বেশি, আর সুবিধা পাচ্ছে চোরেরা। তাই এলডিসি উত্তরণের আগে আমাদের ক্যাপাসিটি বিল্ড আপ করতে হবে।’
বিএনপির স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘দেশের মানুষ যে নতুন স্বপ্ন দেখছে, সেই স্বপ্ন বিএনপিকেই দেখাতে হবে। যেটা দেখাচ্ছেন তারেক রহমান। উনি কোনো ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া জানান না, বরং বিএনপির ভাবনা আর উদ্দেশ্যগুলোই ব্যক্ত করেন। যাদের বক্তব্যে অস্থিরতা, সম্মানহীনতা এবং সহনশীলতার অভাব রয়েছে। তার বিপরীতে বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে— সহনশীলতা, সম্মান-স্বসম্মান, শান্তিপূর্ণ অবস্থান এবং দেশ ও মানুষের নতুন স্বপ্ন গড়ার প্রত্যয়।’
তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কথা হচ্ছে বিনিয়োগ। এর বিকল্প নেই। বিনিয়োগের অন্যতম উৎস হবে পুঁজিবাজার। বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হলে ভবিষ্যতে পুঁজিবাজারকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
অনেকেই বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসতে চান এবং এ জন্য তাঁরা একটি সুন্দর নির্বাচন।







